প্রতিরোধ: জীবাণুমুক্ত করার টানেল বসল শেক্সপিয়র সরণি থানায়। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সংক্রমণ পিছু ছাড়ছে না কলকাতা পুলিশের। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও থানায় পুলিশকর্মীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। অথচ গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউনের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সেই লকডাউন বিধি কার্যকর করতে পথে নামতে হবে পুলিশকর্মীদের। ফলে তা থেকে ফের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে পুলিশকর্মীদের মধ্যে।
কলকাতা পুলিশে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪১ জন। তাঁদের মধ্যে ৫৯৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিদের বেশির ভাগই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কাউকে কাউকে আবার রাখা হয়েছে হোম কোয়রান্টিনে। তবুও প্রতিদিন কোনও না কোনও থানার চার-পাঁচ জন পুলিশকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। বুধবারও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন পুলিশকর্মী। ফলে লকডাউনে কী করে কাজ করবেন পুলিশকর্মীরা, সেটাই অনেকের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লকডাউনের দিনে যাতে সাধারণ মানুষ বাইরে না বেরোন, তা নিশ্চিত করতে পথে নামতেই হবে পুলিশবাহিনীকে। কিন্তু তা করতে গিয়ে নতুন করে বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সেই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
যদিও বাহিনীতে সংক্রমণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করেছেন প্রত্যেক পুলিশকর্মীই। কিন্তু মাস্ক, গ্লাভস, ফেস শিল্ড পরেও করোনা থেকে দূরে থাকতে পারছেন না অনেকেই। ফলে এ বার এক একটি থানায় এক এক রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেমন শেক্সপিয়র সরণি থানায় ঢোকার মুখে বসানো হয়েছে জীবাণুমুক্ত করার টানেল। আবার তারাতলা থানার আধিকারিকদের মধ্যে দূরত্ব-বিধি মেনে চলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। ফলে থানার সেরেস্তা বা মালখানা, সর্বত্রই পাশাপাশি বসা দু’জন পুলিশকর্মীর মাঝখানে বসানো হয়েছে কাচের দেওয়াল। থানার ভিতরেও অফিসারদের বসার জায়গায় বসেছে কাচের দেওয়াল, যাতে কেউ কারও সংস্পর্শে না আসতে পারেন।
বেহালা ডিভিশনের পুলিশকর্মীদের জন্য আবার আলাদা করে তৈরি হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। ওই থানায় কর্মরত পুলিশকর্মীদের কারও করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষার রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত তাঁকে সেখানে রাখা হবে। এর ফলে তাঁর সহকর্মীরা সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচবেন। তারাতলা থানার পাশে নবদিশা স্কুল ভবনে ১০ শয্যার ওই নতুন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে সেখানে শয্যার সংখ্যাও বাড়ানো হবে। তবে পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, বিভিন্ন থানার তরফে এ রকম আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করার চেষ্টা হলেও তাতে বাধা দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাই বেহালা ডিভিশনের জন্য তারাতলা থানার ওই স্কুল ভবনকে বেছে নেওয়া হয়েছে।