—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলকাতা শহরের জবরদখলকারীদের নিয়ে সমীক্ষা করতে কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। এখন শহর জুড়ে চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের সমীক্ষার কাজ। সেই সমীক্ষার কাজ শেষ হলেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা পড়বে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।
প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার পরেই দ্বিতীয় দফার হকার সমীক্ষা শুরু করে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। গত ২৪ জুলাই থেকে এই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড ও আশুতোষ মুখার্জি রোড, মধ্য কলকাতার এসএন ব্যানার্জি রোড ও চাঁদনি চক, উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিট, শিয়ালদহ, বৌবাজার এবং বেহালায় ডায়মন্ড হারবার রোডের ঠাকুরপুকুর থেকে জোকা পর্যন্ত এই সমীক্ষা করা হবে। কলকাতা পুরসভার তরফে ১৫০ জন পুরকর্মীকে হকার সমীক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সমীক্ষার কাজ করতে এক একটি হকার জ়োনে কমবেশি ১০টি করে দল নেমেছিল। প্রতিটি দলে চার-পাঁচ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী কাজ শুরু করেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৪০টি এমন ‘টিম’ নামানো হয়েছিল। কোন রাস্তায় কত হকার বসছেন, তাঁদের নাম, ঠিকানা-সহ যাবতীয় তথ্য অ্যাপে নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে। চলতি মাসের শেষেই দ্বিতীয় সমীক্ষার কাজ শেষ হবে। তার পরেই রিপোর্ট যাবে নবান্নে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রিভিউ বৈঠক হবে। তার পরেই রাজ্য সরকার হকার নীতি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি, হকার নিয়ে কলকাতা পুরসভাও বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বলেই সূত্রের খবর। টাউন ভেন্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেছেন, ‘‘কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ৫৮টি মোড়ে কোনও হকারকে ডালা নিয়ে বসতে দেওয়া যাবে না। শুধু তা-ই নয়, মোড়গুলি থেকে ৫০ ফুটের মধ্যেও কোনও হকার বসতে পারবেন না।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘পিচ রাস্তায় যাতে আর কোনও ভাবেই হকার বসতে না পারেন, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে। সঙ্গে একই নামে একাধিক ডালা থাকা হকারদেরও আর বেশি সংখ্যায় ডালা বসানোর সুযোগ দেওয়া হবে না।’’
কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৫ সালের তালিকা অনুযায়ী শহরে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার হকার থাকার কথা। কিন্তু সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গত ন’বছরে ওই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, বর্তমানে শহরে হকারের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘সমীক্ষার কাজ শেষ হলে যাবতীয় তথ্য পাঠানো হবে নবান্নে। হকারদের ক্ষেত্রে নীতিগত ভাবে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা নেবে রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে নির্দেশ দেবে, তা কার্যকর করবে কলকাতা পুরসভা।’’ আপাতত অপেক্ষা নবান্নে হকার সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়ার।