কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।
এমনিতেই পুরসভার ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। তার উপরে বাড়তি মাথাব্যথা পুরসভা পরিচালিত অনুষ্ঠান বাড়িগুলি (কমিউনিটি হল)। কলকাতা পুর এলাকায় কম খরচে ভাড়া দেওয়ার জন্য মোট ৬৪টি এমন বাড়ি রয়েছে, যেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আয়ের থেকেও বেশি বলে জানাচ্ছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তাই আয় বাড়াতে ওই সব অনুষ্ঠান বাড়ির ভাড়া বাড়াতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। কয়েকটি অনুষ্ঠান বাড়ি তুলে দেওয়া নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
শনিবার মেয়রের উপস্থিতিতে মেয়র পরিষদের বৈঠকে ফের এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তার আগে, বৃহস্পতিবার পুর ভবনে এ নিয়ে আরও একটি বৈঠক হয়। যেখানে ১৬টি বরোর চেয়ারম্যানরা ছাড়াও ছিলেন দুই মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার ও দেবব্রত মজুমদার, পুর কমিশনার বিনোদ কুমার, স্পেশ্যাল মিউনিসিপ্যাল কমিশনার সোমনাথ দে, পুর সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডল।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি বছর ওই অনুষ্ঠান বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বেশির ভাগ কমিউনিটি হল ক্ষতিতে চলছে। এই অবস্থায় অনুষ্ঠান বাড়িগুলি থেকে কী ভাবে লাভ করা যায়, বিস্তারিত আলোচনা চলছে।’’ এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই বাড়িগুলির ভাড়া বেশি নয়। পাঁচ বছর ধরে ভাড়াও বাড়েনি। তার উপরে অনেকেই ছাড়ের সুযোগ নেন। ফলে বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও ওঠে না।’’
পুরসভা পরিচালিত অনুষ্ঠান বাড়িগুলির আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রেখে লাভের মুখ দেখতে একটি পুর কমিটি গঠিত হয়েছে। যার যুগ্ম চেয়ারম্যান মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ) দেবব্রত মজুমদার ও মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার।
কমিউনিটি হলগুলি থেকে আয় কী ভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয় শনিবারের মেয়র পরিষদের বৈঠকে। এ দিন আলোচনা হয়েছে উত্তর কলকাতায় অবস্থিত পাঁচটিরও বেশি পুরসভা পরিচালিত অনুষ্ঠান বাড়ি বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে। সেই সঙ্গে বাকি অনুষ্ঠান বাড়ির ভাড়া ১০-২০ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়েও ফের আলোচনা হয়। স্থির হয়েছে, পরবর্তী মেয়র পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, পুরসভা পরিচালিত অনুষ্ঠান বাড়ি যদি এতই মাথাব্যথার কারণ, তবে গত পুর নির্বাচনী ইস্তাহারে কেন বলা হয়েছিল, পুরসভা প্রতি ওয়ার্ডে অনুষ্ঠান বাড়ি তৈরি করতে চায়? যেখানে নেই, সেখানে কাউন্সিলরদের জমি খুঁজতে বলা হয়েছিল কেন? পুর কর্তৃপক্ষের তরফে এর উত্তর মেলেনি।