শাগুফতার দেহ ঘরের মেঝেয় শোয়া অবস্থায় ছিল। ফাইল ছবি।
পাঁচ পাতার সুইসাইড নোটের সঙ্গে নিজের সঙ্গিনীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ১০৯ পাতা প্রিন্টআউট যুক্ত করে আত্মঘাতীই হয়েছেন বেহালার বাসিন্দা রবীন্দ্রকুমার চৌরাসিয়া। সঙ্গিনী শাগুফতা পরভিনের মৃত্যু নিয়ে খানিকটা ধন্দ থাকলেও শুক্রবার ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে আসতেই দূর হয়েছে সেই সন্দেহ। হরিদেবপুরে জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ময়না তদন্তের সেই রিপোর্ট জানাচ্ছে, দু’জনেই আত্মঘাতী হয়েছেন। ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকেরা সে কথাই জানিয়েছেন।
লালবাজারের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই ঘর থেকে রবীন্দ্রকুমার ও শাগুফতার বিয়ের সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২০২১ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে, এর আগে রবীন্দ্রকুমার ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন। ওই সার্টিফিকেটের সত্যতা যাচাই করবেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জেনেছে, রবীন্দ্রকুমার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ করেননি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিদেবপুর থানা এলাকার চাঁদের ভিলেজ রোডের একটি ফ্ল্যাটের বন্ধ দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় ওই দু’জনের দেহ। রবীন্দ্রকুমারের দেহটি ছিল ঝুলন্ত অবস্থায়। শাগুফতার দেহ ঘরের মেঝেয় শোয়া অবস্থায় ছিল। রবীন্দ্রকুমারের বাড়ি বেহালায়। সেখানে তাঁর প্রথম স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছেন।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই সঙ্গিনীকে নিয়ে হরিদেবপুর এলাকায় থাকতেন রবীন্দ্র। কিছু দিন আগে তাঁদের মধ্যে বিরোধ হয়। শাগুফতার একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখার পর থেকেই দু’জনের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। এর পর থেকেই দু’জনে একসঙ্গে থাকতেন না। মৃতের প্রথম স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, রবীন্দ্রকে বিভিন্ন বিষয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন বলে মাস ছ’য়েক ধরে হুমকি দিচ্ছিলেন শাগুফতা। এ দিকে, ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটেও মৃত্যুর জন্য শাগুফতাকে দায়ী করেছেন রবীন্দ্র। ওই চ্যাটে কী লেখা রয়েছে, সেবিষয়ে গোয়েন্দারা কিছু জানাননি। তবে দু’জনের মধ্যে যে সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল না, তা ওই নোটে ধরা পড়েছে। কয়েক মাস ধরে শাগুফতা তাঁকে বিরক্ত করছিলেন, নোটে রবীন্দ্র এমন অভিযোগও করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার সকালে ওই দু’জন চাঁদের ভিলেজের ফ্ল্যাটে আসেন। পুলিশের কাছে কয়েক জন প্রতিবেশীর দাবি, ওই রাতে ফ্ল্যাট থেকে দু’জনের বচসার আওয়াজ আসছিল। তবে গভীর রাতের পরে ওই ফ্ল্যাট থেকে আর কোনও শব্দ তাঁরা পাননি।