সাঁতরাগাছি ঝিল। —ফাইল চিত্র।
জমির লাইসেন্স-ফি নিয়ে রাজ্য ও রেলের মধ্যে জটিলতার কারণে ঝিলের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পিছিয়ে যেতে পারে না। রাজ্য সরকারকে দ্রুত রেলের সঙ্গে উদ্ভূত জটিলতার সমাধান করতে হবে। যত ক্ষণ না সমাধান হচ্ছে, তত ক্ষণ ঝিলের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সাঁতরাগাছি ঝিলের দূষণ সংক্রান্ত এক মামলায় রাজ্যকে এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই সঙ্গে ঝিলের দূষণ নিয়ন্ত্রণে নিকাশি
পরিশোধন প্লান্ট (সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরির কাজ কত দূর এগিয়েছে, তা নিয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, আট বছর আগে সাঁতরাগাছি ঝিল সংলগ্ন জায়গায় এসটিপি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শেষ পর্যন্ত গত ১১ জুলাই মুখ্যসচিব হলফনামা জমা দিয়ে আদালতকে জানান, এসটিপি তৈরির জমির জন্য কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের মধ্যে লিজ়-চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী রেলওয়ের ১৪,৯৬২ বর্গমিটার জমিতে ওই এসটিপি হবে বলে ঠিক হয়েছে। ৩৫ বছরের মেয়াদে ওই জমির লাইসেন্স-ফি বাবদ কেএমডিএ ২,৪৪,৫৮৮ টাকা দিয়েছে রেলকে।
প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এ পর্যন্ত মোটামুটি ঠিকই ছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা যায়, দূষণ নিয়ন্ত্রণে ঝিলের চার দিকে নর্দমার মালা (গারল্যান্ড ড্রেনস) তৈরির জন্য জমির লাইসেন্স-ফি নিয়ে। মে মাসে রাজ্য নগরোন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দফতর রেলের কাছে প্রস্তাব পাঠায়, এই নর্দমার মালা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমির লাইসেন্স-ফি বাবদ প্রায় ১.৯২ কোটি টাকা পুরোপুরি মকুব করার। কিন্তু মে মাসের শেষেই রেল জানিয়ে দেয়, রেলওয়ে বোর্ডের ‘মাস্টার সার্কুলার পলিসি’ অনুযায়ী, লাইসেন্স-ফি সম্পূর্ণ মকুবের নিয়ম নেই। জমির লাইসেন্স-ফি নিয়ে জটিলতার প্রেক্ষিতেই রাজ্যকে পরিবেশ আদালতের ওই নির্দেশ।
আদালতে রাজ্য আরও জানায়, ঝিলের দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২৮.৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত এসটিপি তৈরি, নিকাশির গতিপথ পরিবর্তন-সহ যাবতীয় কাজ করা হবে। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘আট বছর হয়ে গেল এই মামলার। শুধু চাপান-উতোর চলছে। কাজের কাজ হচ্ছে না।’’