গোলাপি ক্রিকেটে বেটিংয়ের কালো ছায়া, গ্রেফতার

গোয়েন্দারা জানান, এর আগে প্রথম টেস্টে বুকিদের কাছে দরে ভারতের ধারেকাছে ছিল না বাংলাদেশ। কিন্তু পিঙ্ক টেস্ট ম্যাচ অবশ্য পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি

গোলাপি বলে ভারত-বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচকে কেন্দ্র করে গোটা শহর আক্রান্ত। আর তার সঙ্গেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ক্রিকেট বেটিং চক্রও।

Advertisement

গোয়েন্দারা জানান, এর আগে প্রথম টেস্টে বুকিদের কাছে দরে ভারতের ধারেকাছে ছিল না বাংলাদেশ। কিন্তু পিঙ্ক টেস্ট ম্যাচ অবশ্য পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিয়েছে। ইডেনে বুকিদের কাছে গোলাপি বলের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরে বেটিং চক্র যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে তা বিভিন্ন সূত্র মারফত জেনেছিল লালবাজার।

শনিবার রাতে খেলা চলাকালীন ইডেনের জি-ওয়ান ব্লকে নজরদারি করার সময়ে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা ‘লাইভ-বেটিং’ চক্রের হদিস পান। সেখানে মোবাইলে বেটিং-অ্যাপের মাধ্যমে পাঁচ জনকে বেটিং করতে হাতেনাতে ধরেন গোয়েন্দারা। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা শম্ভু দয়াল, মুকেশ গারে, চেতন শর্মা, অভিষেক সুওয়ালকা এবং আয়ুব আলিকে মোবাইল, ল্যাপটপ এবং ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা-সহ ধরে পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই প্রথম ইডেন থেকে লাইভ বেটিংয়ের মতো ঘটনা সামনে এল।’’

Advertisement

অন্য দিকে শুক্রবার খেলা চলাকালীনই গোয়েন্দারা ক্রিকেট বেটিং চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করে কুন্দন সিংহ, মুকেশ মালি, সঞ্জয় সিংহ এবং সারজিল হোসেন নামে বেটিং চক্রের চার পান্ডাকে। জোড়াবাগান থানা এলাকার বৃন্দাবন বসাক স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের থেকে দু’টি কম্পিউটার, চারটি মোবাইল ফোন এবং দু’ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃত কুন্দনের বাড়িতেই ওই বেটিং চক্র চলত। অভিযান চালানোর সময়ে সেখানে ছিল মুকেশ এবং সঞ্জয়। মুকেশের বাড়ি রবীন্দ্র সরণিতে, সঞ্জয় থাকে দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিটে। ওই তিন জনকে জেরা করে সরজিলের সন্ধান মেলে। রাতেই নিউ মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সারজিল হোসেনকে। তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতায় বেটিং চক্রের মাথা ছিল সন্দীপ সিংহ ওরফে গোবিন। ভারতের পক্ষে যেখানে বাজির দর এক টাকায় ৯০ পয়সা। সেখানে বাংলাদেশের দর মাত্র ১০ পয়সা। কিন্তু কলকাতায় ওই খেলার আগ্রহ থাকায় গত দু’দিন ধরেই বেটিং বাজারের গ্রাফ তুঙ্গে উঠেছিল বলে পুলিশের কাছে জানায় ধৃতেরা।

প্রাথমিক তদন্তের পরে গোয়েন্দারা জানান, ওই বেটিং চক্র চলে দুবাই থেকে। মুম্বইয়ে রয়েছে চক্রের এজেন্ট। সেখান থেকে অনলাইনে কলকাতা-সহ গোটা দেশে বেটিং নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ধৃতেরা পুলিশকে জানায়, যে কেউ ওই বেটিংয়ে অংশ নিতে পারত না। বেটিংয়ে অংশ নিতে হলে প্রথমে আইডি কিনতে হত। তার জন্য ধৃতেরা পেত প্রায় তিরিশ হাজার টাকা। ওই টাকা পাওয়ার পরেই যিনি আইডি কিনতেন তাঁকে ধৃতেরা একটি নিদিষ্ট অ্যাপসের আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিত। তা দিয়ে ওই অ্যাপসে লগইন করলেই বেটিং-এ অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র মিলত। পুরোটাই চলত অনলাইনে।

এক গোয়েন্দা কর্তা জানান, অনলাইনে ওই খেলার ছাড়পত্র মেলার পরেই প্রতিটি বল বা রানের হিসেবে বাজি ধরা হত। এমনকি খেলার শুরুতে টস থেকে শুরু করে ম্যাচ চলাকালীন বৃষ্টি হবে কি না, তা-ও বাজি ধরা যায় ওই অনলাইনের মাধ্যমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement