Suicide

Violence Against Women: থানায় ঢুকে আত্মহত্যার চেষ্টা বৃদ্ধার, ধৃত ছেলে

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বছর পঁয়ত্রিশের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একবালপুর থানায় যান বছর ষাটেকের ওই মহিলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১৮
Share:

একবালপুর লেনের বস্তির এই ঘর নিয়েও ছেলের সঙ্গে বিবাদ বলে অভিযোগ বৃদ্ধার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ, ছেলে তাঁদের দেখে না, মারধর করে। ঘর থেকে বার করে দিয়ে সেখানে শুধু স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে চায়। বয়স্ক বাবার ভাতের হোটেলেরও দখল নিতে চায় সেই ছেলে। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা মেলেনি। দিনের পর দিন থানায় গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এমনই সব অভিযোগ নিয়ে একবালপুর থানায় ঢুকে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক বৃদ্ধা। পুলিশের তৎপরতায় অবশ্য কোনও বিপদ ঘটেনি। কেরোসিন তেল ঢেলে ফেললেও গায়ে আগুন ধরানোর আগেই তাঁকে ধরে ফেলেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। পরে বৃদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বছর পঁয়ত্রিশের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একবালপুর থানায় যান বছর ষাটেকের ওই মহিলা। সোজা ইনভেস্টিগেশন অফিসারের ঘরে ঢুকে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুরু করেন তিনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশকর্মী বলেন, “এর পরেই ওই বৃদ্ধা মরতে চাই বলে চেঁচাতে শুরু করেন। সঙ্গে আনা একটা প্লাস্টিকের বোতল থেকে কেরোসিন তেল ঢালতে শুরু করেন নিজের গায়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশলাইও বার করে ফেলেন তিনি। আমাদের এক মহিলা পুলিশকর্মী সামনেই ছিলেন। তিনিই এর পরে বৃদ্ধার হাত চেপে ধরেন।” পুলিশ জানায়, দ্রুত বৃদ্ধাকে নিয়ে গিয়ে থানার বাইরে বসানো হয়। গায়ে মাথায় জল ঢেলে তাঁকে শান্ত করে সমস্ত রকম পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন তদন্তকারীরা। থানার ওসির ঘরে বসিয়ে শোনা হয় বৃদ্ধার কথা।

বৃদ্ধা জানান, তাঁরা আগে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় থাকতেন। অভিযোগ, তাঁর বছর তেত্রিশের ছেলে কোনও কাজ করে না। তাঁর স্বামীর আয়েই সংসার চলে। কয়েক বছর আগে তাঁরা একবালপুর লেনের বস্তিতে উঠে এসেছেন। সেখানকার একটি ছোট ঘরে স্বামী, মেয়ে এবং ছেলেকে নিয়ে বৃদ্ধা থাকেন। কিন্তু ছেলে প্রায়ই নেশা করে এসে তাঁকে এবং তাঁর মেয়েকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বছর সাতেক আগে এক মহিলার সঙ্গে ছেলের বিয়েও হয়েছে। ওই মহিলা প্রথম পক্ষের স্বামীকে ছেড়ে এসেছেন। এখন বাবা, মা এবং বোনকে ঘর থেকে বার করে দিয়ে ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে চায় বলে অভিযোগ বৃদ্ধার।

Advertisement

বৃদ্ধার আরও অভিযোগ, এ নিয়ে আগে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বার বার থানায় গেলে এখন তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ দিন সকালেও ছেলে মত্ত অবস্থায় এসে তাঁকে লাঠিপেটা করেছে বলে অভিযোগ। এমনকি, তাঁকে বাঁচাতে গেলে মার খেতে হয় মেয়েকেও। দু’জনকেই ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, এর পরেই তিনি কেরোসিন তেল নিয়ে থানায় গিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে ঠিক করেন। বৃদ্ধা এ দিন বলেন, “পাড়ার কয়েক জনকে সমস্যার কথা বলেছিলাম। তাঁরাই বুদ্ধি দিয়েছিলেন যে থানায় কেরোসিন তেল নিয়ে যাও। এ ভাবে সত্যিই বেঁচে থাকা যাচ্ছে না। তাই এই পথই বেছে নিয়েছিলাম। এমন করলাম বলেই তো আজ পুলিশ এত কথা শুনল!” কলকাতা পুলিশের বন্দর ডিভিশনের ডিসি জ়াফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “বৃদ্ধাকে সমস্ত রকমের সাহায্য করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ধরাও পড়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement