রজত সরকার।
রাত ১টাতেও হোটেলের সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মাঝরাতে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়ে হোটেলের নিরাপত্তরক্ষীরা ছুটে গিয়ে দেখলেন, পড়ে আছে ওই ব্যক্তিরই রক্তাক্ত দেহ।
মঙ্গলবার রাতে পুরীর একটি হোটেলের ঘটনা। মৃতের নাম রজত সরকার (৪৮)। তিনি হাওড়া পুরসভার ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। প্রাথমিক তদন্তে ওড়িশা পুলিশের ধারণা, হোটেলের ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে তিনি পড়ে গিয়েছেন, স্পষ্ট হয়নি। রজতবাবুর সঙ্গী দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তে নেমেছে পুরী সি বিচ থানার পুলিশ। হাওড়া পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলও পুরী রওনা হয়েছে।
রজতবাবুর বাড়ি উত্তর হাওড়ার লালবিহারী বসু লেনে। পুলিশ জানায়, রবিবার বিমানে পুরী পৌঁছন রজতবাবু। সঙ্গে হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ ও উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌধুরী, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বাপি মান্না এবং পার্থ রায় নামে এক বন্ধু। পুলিশ জানায়, একসঙ্গে গেলেও রজতবাবু অন্য হোটেলে ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে ওড়িশা পুলিশ জানায়, রজতবাবু যে হোটেলে উঠেছিলেন সেখানে তাঁর পরিচিত এক মহিলা এবং ওই মহিলার মাসিও ছিলেন। রজতবাবু ছিলেন তিনতলায় ৩০৪ নম্বর ঘরে। ওই দুই মহিলা ছিলেন একতলার ১০৯ নম্বর ঘরে। তদন্তকারীরা জানান, মঙ্গলবার পুজো দিতে বেরিয়ে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ মত্ত অবস্থায় ফেরেন রজতবাবু। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তিনি ঠিক মতো দাঁড়াতেই পারছিলেন না।
সি-বিচ থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার প্রভাতকুমার মল্লিক বলেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাত ১টা নাগাদ রজতবাবু একা ঘর থেকে বেরিয়ে ছাদে ওঠেন। কিছু পরেই শব্দ শুনে হোটেলের লোকজন গিয়ে দেখেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।’’
পুলিশ জানায়, ছাদের এক দিকে পাঁচিল নেই। সে দিকে বাঁশের ভারা বাঁধা। ঠিক তার নীচেই রজতবাবুর দেহ মেলে। কিন্তু কেন অত রাতে তিনি ছাদে গেলেন এবং কেনই বা ওই খোলা জায়গায় গেলেন, জানা যায়নি।
এ দিন রজতবাবুর বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে রয়েছেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল। তিনি বলেন, ‘‘আমি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহকে জানালে তিনি পুরীর পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। ওড়িশা পুলিশ দ্রুত ময়না তদন্ত করে দেহ ছেড়ে দেয়।’’
রজতবাবুর স্ত্রী ঝুমাদেবী বলেন, ‘‘বুধবার ওঁর ফেরার কথা ছিল। এ দিন পুরীর থানা ফোনে খবর দেয়।’’ তাঁদের মেয়ে অনিন্দিতা জানান, পুলিশের কাছে অভিযোগ করে ঘটনার তদন্তের দাবি জানাবেন তাঁরা।