সুড়ঙ্গপথে প্রথম ‘গঙ্গা অতিক্রম’ করার বিষয়টিকে রাজসূয় আয়োজনে সাজানোর ভাবনা রয়েছে। ফাইল ছবি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে নদীর নীচের সুড়ঙ্গ দিয়ে মেট্রোর রেক হাওড়ায় নিয়ে যাওয়ার যাবতীয় নির্ঘণ্ট প্রস্তুত ছিল। কিন্তু রবিবার শেষ পর্যন্ত তা না করে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর দু’টি রেককে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল এসপ্লানেড স্টেশন ছাড়িয়ে বি বা দী বাগ স্টেশনের দিকে কিছুটা নিয়ে গিয়েই। আপাতত সেখানেই থাকবে রেক দু’টি। কবে রেক হাওড়া পৌঁছবে, তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। মেট্রো সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গপথে প্রথম ‘গঙ্গা অতিক্রম’ করার বিষয়টিকে রাজসূয় আয়োজনে সাজানোর ভাবনা রয়েছে। প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে রেলমন্ত্রী বা সমমর্যাদার কারও উপস্থিতিতে তা হতে পারে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সেন্ট্রাল পার্কের ডিপো থেকে রেক নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে গোপনীয়তায় মুড়ে রাখা হয়েছিল। রেক নিয়ে যাওয়ার কথা প্রকাশ্যে আসার পরে গত ৪৮ ঘণ্টায় আচমকা কেএমআরসিএল এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষ কার্যত মুখে কুলুপ আঁটেন। এ দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারি ভাবে কিছুই জানানো হয়নি। আধিকারিকেরা সকলেই ‘খুঁটিনাটি প্রস্তুতি’ চলার কথা জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের এই ঢাক ঢাক গুড় গুড় নিয়ে নানা মহলে বিভ্রান্তিও ছড়ায়।
মেট্রো সূত্রের খবর, রেক নিয়ে যাওয়ার জন্য রাতেই শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের মুখে বসানো বাফার সরিয়ে ফেলা হয়। সকাল সাড়ে আটটার কিছু পরেই ৬১২ এবং ৬১৩ নম্বর রেককে শিয়ালদহ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়। সকাল ৯টা নাগাদ দু’টি রেকই ইস্ট-ওয়েস্টের শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে এসে পড়ে ব্যাটারিচালিত বিশেষ লোকোমোটিভ। সাড়ে ১০টার মধ্যে রেকের পিছনে লোকোমোটিভ জুড়ে ফেলার কাজও হয়ে যায়। এর পর সকাল ১০টা ৫৬ মিনিট নাগাদ প্রথম রেক বৌবাজার হয়ে এসপ্লানেড অভিমুখে যেতে শুরু করে। ঘণ্টাখানেকে সেই যাত্রা সম্পূর্ণ হয়। বৌবাজারে প্রথম বিপর্যয়ের চার বছর পরে সেই এলাকা পেরোয় মেট্রোর রেক। মেট্রো কর্তাদের কাছে ওই মুহূর্ত যথার্থই সাফল্যের।
অন্য রেকটি দুপুর আড়াইটা নাগাদ শিয়ালদহ থেকে রওনা হয়ে বিকেল চারটের মধ্যে এসপ্লানেড পৌঁছয়। ব্যাটারিচালিত লোকোমোটিভ নিয়ে সুড়ঙ্গের উঁচু-নীচু পথে যাওয়ার সময়ে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। তাই রেকের গতি ছিল খুব কম। শিয়ালদহ এবং এসপ্লানেডের মধ্যে থার্ড রেলের বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ওই ব্যবস্থা করতে হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, পুরো প্রক্রিয়া মসৃণ রাখতে দীর্ঘ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রেক মসৃণভাবে গঙ্গার অন্য প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্যও বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হবে। তার পরেই সেই ‘কৃতিত্ব’ সামনে আনতে চান কর্তৃপক্ষ।