—প্রতীকী ছবি।
বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যাওয়ায় পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের রীতিমতো হেনস্থা ও শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল সেই বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে বেহালার পর্ণশ্রীতে একটি বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে পুলিশ, পুর ইঞ্জিনিয়ার-সহ ছ’জনকে ওই বাড়ির মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। শেষে পর্ণশ্রী থানা থেকে আরও বাহিনী এসে তাঁদের কোনও মতে উদ্ধার করে। এ দিন ১২ নম্বর বরোর অধীন গরফা থানা এলাকাতেও একটি তেতলা অবৈধ বাড়ি ভাঙতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের পাড়ুই কাঁচা রোডে একটি দোতলা বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যান পুলিশ ও পুরকর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, বাড়ির কিছুটা অংশ ভাঙার পরেই দরজা বন্ধ করে পুলিশ ও পুর ইঞ্জিনিয়ারদের প্রবল হেনস্থা করেন ওই বাড়ির লোকজন। তাঁদের গায়ে হাত দেওয়া হয়।
প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল বুধবারেও, চারু মার্কেট থানার অন্তর্গত ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহিমউদ্দিন লেনে। সেখানে বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছে একটি চারতলা বাড়ি। অভিযোগ, সেটি ভাঙতে গেলে এক মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে হেনস্থাও করা হয়। হেনস্থার মুখে পড়েন দুই সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারও। শেষে এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাঁরা ওই বাড়ি না ভেঙেই চলে আসেন। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে হেনস্থা করা হলেও পুলিশ ছিল দর্শক। তারা বিশৃঙ্খলা থামানোর কোনও চেষ্টাই করেনি। গোটা ঘটনাটি পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং)-কে জানিয়েছেন নিগৃহীত ও ক্ষুব্ধ সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা।
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার তরফে ‘এসওপি’ জারি করে বলা হয়েছে, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এলেই সেটি তৎক্ষণাৎ ভাঙার ব্যবস্থা করতে হবে। পুর নির্দেশিকা অনুযায়ী, কাজের দিনে সকাল থেকে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে বেআইনি বাড়ি পরিদর্শন করবেন। কিন্তু অভিযোগ, গত এক মাস ধরে বিভিন্ন বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে সব চেয়ে বেশি হেনস্থার শিকার হয়েছেন তাঁরাই। পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত না থাকার অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের যথাযথ নিরাপত্তার দাবিতে আজ, শুক্রবার কলকাতা পুর ভবনে বিক্ষোভ দেখাবে ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন ‘কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যালায়েড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন’।