Kolkata municipality

Kolkata Municipality: পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে পুর মাতৃসদন

পুরসভা পরিচালিত ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে চম্পামণি মাতৃসদনটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:১০
Share:

বেহাল: (বাঁ দিকে) বন্ধ পড়ে ওটি। (ডানদিকে) এমন যৎসামান্য পরিকাঠামো নিয়েই চলছে কলকাতা পুরসভার গার্ডেনরিচের মাতৃসদনটি। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কোথাও চালু নেই ওটি পরিষেবা। কোথাও আবার পর্যাপ্ত চিকিৎসক বা নার্সের অভাব রয়েছে। কলকাতা পুরসভার ওয়েবসাইটে নাম জ্বলজ্বল করলেও কোনওটির পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কলকাতা পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনগুলির বর্তমান অবস্থা এমনই।

Advertisement

পুরসভা পরিচালিত ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে চম্পামণি মাতৃসদনটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। খিদিরপুর মাতৃসদনটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালনাধীন। আর পুরসভা পরিচালিত বাকি দু’টি মাতৃসদন— উত্তর কলকাতার দর্জিপাড়ার নর্থ মেটারনিটি হোম এবং দক্ষিণ কলকাতার গার্ডেনরিচ মেটারনিটি হোম বর্তমানে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। ওই দু’টি মাতৃসদনেই এখন বন্ধ রয়েছে ওটি। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং নার্সও। গার্ডেনরিচের মাতৃসদনে ইউএসজি করানোর যন্ত্র থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় না।

উত্তর কলকাতার নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের নর্থ মেটারনিটি হোমে যেখানে তিনটি শিফটে মোট ছ’জন চিকিৎসকের থাকার কথা, সেখানে রয়েছেন মাত্র দু’জন। স্থায়ী নার্সের সংখ্যা তিন। বাকি তিন জন নার্স সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত থাকেন। গার্ডেনরিচের অবস্থাও তথৈবচ। অথচ উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণ কলকাতার এই মাতৃসদনে রোগীর চাপ বেশ বেশি। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা প্রচুর অন্তঃসত্ত্বাই এখানে সন্তানপ্রসবের জন্য আসেন। গার্ডেনরিচের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘কয়েক বছর ধরে এখানে ওটি বন্ধ, তাই প্রচুর রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়।’’ ওই মাতৃসদনের এক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘অস্ত্রোপচার করার চিকিৎসকই নেই! তাই ওটি-ও চালু করা যাচ্ছে না।’’

Advertisement

কেন এই দুরবস্থা? গার্ডেনরিচ মাতৃসদনের সুপার মিনার জাহান প্রথমে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরে বলেন, ‘‘আগে এখানে অস্ত্রোপচার হত।’’ এখন হয় না কেন? তাঁর জবাব, ‘‘আমি কিছু জানি না। যা বলার পুর কর্তৃপক্ষ বলবেন।’’

শুধু ওটির সমস্যাই নয়, গার্ডেনরিচ এবং দর্জিপাড়ার দু’টি মাতৃসদনে ওষুধ-স্যালাইনও বেশির ভাগ সময়ে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেছেন সেখানকার কর্মীরা। দর্জিপাড়ার মাতৃসদনের এক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘পুরসভা থেকে ওষুধ, স্যালাইন বার বার চেয়েও মেলে না। বেশির ভাগ সময়ে রোগীর বাড়ির লোক বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নেন।’’ গার্ডেনরিচের মাতৃসদনের এক চিকিৎসক বলছেন, ‘‘ওষুধ, স্যালাইন নিয়ে আগে এই সমস্যা ছিল না।’’

অন্য দিকে, ট্যাংরা ও তপসিয়ার বাসিন্দাদের সুবিধার্থে ১৯৬৪ সালে চালু হওয়া চম্পামণি মাতৃসদনের অন্তর্বিভাগি কয়েক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রায় চার বিঘা জমি জুড়ে ওই তিনতলা বাড়িটি এখন পরিত্যক্ত। খিদিরপুরের একবালপুর রোডে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনটির সংস্কার করে তার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শুধু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে পুরসভার কাঁধে। সংস্কারের পরে গত ফেব্রুয়ারিতে ওই মাতৃসদনের উদ্বোধন হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গেল, চলছে বহির্বিভাগের পরিষেবা। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘শীঘ্র অন্তর্বিভাগ চালু হবে। এখানে দু’টি ওটি ছাড়াও সদ্যোজাত বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় পরিষেবার ব্যবস্থাও থাকছে।’’

নর্থ কলকাতা এবং গার্ডেনরিচের মাতৃসদনের এমন অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘কোনও সমস্যা নেই। ডাক্তার, রোগী ঠিকঠাকই আছেন।’’ তবে ফের কবে থেকে অস্ত্রোপচার চালু হবে? তাঁর উত্তর, ‘‘ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement