Garden Reach Building Collapse

গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে ছায়া কি কয়লা পাচার মামলার

প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি ও সিবিআইয়ের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র পলাতক থাকার প্রসঙ্গ তুলেছেন আইনজীবীদের একটি অংশ। ২০২০ সালে ফেরার হয়ে গিয়েছিল বিনয়।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ০৮:২৮
Share:

—ফাইল ছবি।

মাস তিনেক আগে গার্ডেনরিচের আজাহার মোল্লা বাগান এলাকায় অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যুর অন্যতম এক অভিযুক্ত বিদেশে পালিয়েছে বলে আদালতে দাবি করল কলকাতা পুলিশ। সম্প্রতি জেল হেফাজতে থাকা বাকি ছ’জনের বিরুদ্ধে আলিপুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা, মহম্মদ শাহনওয়াজ ওরফে সঞ্জয় নামে এক অভিযুক্ত পলাতক বলে আদালতে জমা নথিতে দাবি করেছেন তদন্তকারী অফিসার।

Advertisement

আদালত সূত্রের খবর, তাকে নিয়ে সাত জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তদন্ত সংক্রান্ত বহু নথি জমা দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। তিনি সেখানেই উল্লেখ করেছেন যে পলাতক সঞ্জয় বিদেশে রয়েছে। যদিও কোনও নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করেননি ওই অফিসার। সেখানেই কয়লা পাচার কাণ্ডের ছায়া দেখছেন আইনজীবীদের একাংশ।

প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি ও সিবিআইয়ের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র পলাতক থাকার প্রসঙ্গ তুলেছেন আইনজীবীদের একটি অংশ। ২০২০ সালে ফেরার হয়ে গিয়েছিল বিনয়। পরে জানা যায়, ভানুয়াতু নামে একটি দ্বীপরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়ে রয়েছে সে। বিনয় মিশ্রের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের তরফে ‘রেড কর্নার’ নোটিস জারি করা হয়েছে। কিন্তু চার বছর পরেও অধরা বিনয়। সেই সূত্রেই আইনজীবীদের অনেকের আশঙ্কা, সঞ্জয়ের ক্ষেত্রেও কি এমনটা হতে পারে?

Advertisement

ষদিও লালবাজারের এক গোয়েন্দা কর্তার আশ্বাস, ‘‘সঞ্জয় কোন দেশে পালিয়ে গিয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজ পেতে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে।’’

গার্ডেনরিচ কাণ্ডে চার্জশিটে নাম থাকা অভিযুক্ত ছয় জন প্রোমোটার, জমির মালিক, ঠিকাদার, এবং কয়েক জন মিস্ত্রি। আদালতে পেশ করা নথিতে তদন্তকারী অফিসারের দাবি, এ রাজ্য-সহ গোটা দেশে তল্লাশি চালিয়েও সঞ্জয়ের খোঁজ মেলেনি। শেষে জানা যায়, বিদেশে পালিয়েছে সে। তদন্তকারী অফিসারের আরও দাবি, মাসখানেক আগে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি হয়েছে। তা ছাড়াও ‘ব্লু নোটিস’ জারির সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ব্লু নোটিস ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে সঞ্জয়ের সব বিবরণ পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। এ দেশে তার অপরাধের তথ্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি। তবে জমা নথিতে সঞ্জয়ের যোগসূত্রের বিষয়ে বিশদ তথ্য পেশ করা হয়নি বলে খবর। তদন্তে উঠে এসেছে, সঞ্জয় বন্দর এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।

আজাহার মোল্লা বাগানের অবৈধ নির্মাণ ভেঙে পড়ার পরে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতর ‘সিট’ গঠন করে তদন্ত শুরু করে। তবুও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্ত কী ভাবে বিদেশে পালাতে সক্ষম হল, উঠছে সেই প্রশ্ন। ঘটনায় পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অথচ সঞ্জয় বিদেশে পালাতে সক্ষম হয়েছে।

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে তদন্তের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দিয়ে কী ভাবে এক জন গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্ত বিদেশে পালিয়ে গেল? তবে কি তাকে পালাতে সহযোগিতা করা হয়েছে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement