কলকাতা বইমেলা। —ফাইল চিত্র।
আইনি দিক থেকে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কলকাতা বইমেলায় এই প্রথম বার পা রাখতে চলেছেন সংশোধনাগারের বন্দিরা। রাজ্য মহিলা কমিশনের উদ্যোগে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের একাংশ বইমেলায় অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন মহিলা কমিশনের স্টলের সামনে। কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, বন্দিদের নিয়ে এমন অনুষ্ঠান বইমেলায় এই প্রথম।
কারা দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার লীনা কারা দফতরের এক শীর্ষ কর্তাকে ইমেল করেছেন। তাতে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে সাজাপ্রাপ্ত যে বন্দিরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের দিয়ে কলকাতা বইমেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করানোর ইচ্ছার কথা জানান। এডিজি (কারা) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘আবেদন এসে থাকলে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’
কারা আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, রুটিন জেল বদল ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের প্যারোল দিয়ে সংশোধনাগারের বাইরে নিয়ে যাওয়াই নিয়ম। সে ক্ষেত্রে তাঁদের গন্তব্যস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় পুলিশ। অনুষ্ঠানের দিন জেলরক্ষীরা বন্দিদের নিয়ে যান। সঙ্গে থাকেন জেল আধিকারিকেরাও। অনুষ্ঠানস্থলে আগে থেকেই থাকে স্থানীয় পুলিশ, জেলরক্ষী, সাদা পোশাকে পুলিশও। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বর্ধমান সংশোধনাগারের ন’জন বন্দিকে বইমেলায় পাঠানো যেতে পারে। তবে, সবই নির্ভর করবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপরে। ১২ ঘণ্টার প্যারোল পেলে তাঁদের সকালে বইমেলায় নিয়ে গিয়ে রাতের মধ্যে সংশোধনাগারে ফিরিয়ে আনা হবে।’’
প্রসঙ্গত, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি, বারাসতের হৃদয়পুরে খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত মনুয়া মজুমদার এখন জেলের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। জেলের একটি সাময়িকী (ম্যাগাজ়িন) সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন তিনি। তাঁকে বইমেলায় পাঠানো যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হবে। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মনুয়া-সহ কয়েক জন বন্দি সম্প্রতি বর্ধমানে খাদ্যমেলার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে অনেক ভিড় হয়েছিল।’’ এই নিয়ে কলকাতা বইমেলায় দ্বিতীয় বার স্টল দিচ্ছে রাজ্য মহিলা কমিশন। ১৯ তারিখ ওই স্টলের উদ্বোধন হবে। এ বারও কমিশনের স্টলে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হবে।