Illegal

Accident: পড়ে থাকা গার্ডরেলের বেআইনি ব্যবহার, বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কাও

স্থানীয়েরাই জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগে ওই খালপাড়ের রাস্তায় একটি বাড়িতে থাকতেন রাজ্য পুলিশের এক বড় কর্তা।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৬:৩৫
Share:

সল্টলেকে রাস্তার পাশে গার্ডরেলের আড়ালে দাঁড়িয়ে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

এলাকার বাসিন্দা এক পুলিশকর্তার নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর বাড়ির সামনে এক সময়ে কিছু গার্ডরেল বসিয়েছিল পুলিশ। কয়েক বছর আগে ওই পুলিশকর্তা ঠিকানা বদলে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। কিন্তু এলাকার পথে আজও যত্রতত্র পড়ে রয়েছে সেই গার্ডরেল। পুলিশকর্তার নিরাপত্তায় ব্যবহৃত ওই গার্ডরেলের এখন বহু ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে স্থানীয়দের ব্যক্তিগত কাজে—কেউ গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে রাখছেন গাড়ি। কেউ আবার বাড়ির সামনের রাস্তার একাংশে গাড়ি রেখে গার্ডরেল দিয়ে আড়াল করে রাখছেন! কোথাও গার্ডরেলের আড়ালে পড়ে থাকছে নির্মাণ সামগ্রী। আর এর জেরেই আরও সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে সল্টলেকের ইস্টার্ন ড্রেনেজ খাল সংলগ্ন রাস্তা। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

Advertisement

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর মেট্রো স্টেশনের সামনে দাঁড়ালেই দেখা যায় ওই গার্ডরেলগুলি। খালপাড়ের ওই অংশে রয়েছে ডিএল, সিএল, বিএল ব্লক এবং একটি স্কুল। স্থানীয়দের অভিযোগ, গার্ডরেলগুলি সরিয়ে দিয়ে দু’লেনের রাস্তাটি আরও চওড়া করার জন্য তাঁরা বহু বার পুলিশকে বলা সত্ত্বেও লাভ হয়নি। উল্টে গার্ডরেলের জেরেই যানজট তৈরি হচ্ছে। এমনকি, এর জেরে দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের মতো দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয়েরাই জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগে ওই খালপাড়ের রাস্তায় একটি বাড়িতে থাকতেন রাজ্য পুলিশের এক বড় কর্তা। নিরাপত্তার কারণে তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সে সময়ে ওই গার্ডরেলগুলি রেখেছিল বিধাননগর পুলিশ। কিন্তু পুলিশকর্তা এলাকা ছেড়ে চলে গেলেও রয়ে গিয়েছে গার্ডরেলগুলি। আর সেগুলিই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যক্তিগত কাজে।

Advertisement

সম্প্রতি সল্টলেকের খালপাড়ের ওই অংশে গিয়ে দেখা গেল, যেখানে-যেখানে গার্ডরেল পড়ে রয়েছে, সেখানে রাস্তার ওই অংশ বাদ দিয়েই গাড়িগুলিকে চলাচল করতে হচ্ছে। আর তার ফলেই অনেক সময়ে দু’টি গাড়ি মুখোমুখি এসে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, এমন পরিস্থিতিতে কোনও চালক অসতর্ক থাকলেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাঁদের মতে, রাস্তার সর্বত্র গার্ডরেল থাকলে এই সমস্যা হত না। কিন্তু কোথাও কোথাও গার্ডরেল থাকাতেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। বিএল ব্লকের এক বাসিন্দার মতে, ‘‘রাতের দিকে ফাঁকা রাস্তায় বেশি গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা থাকে চালকদের। গোটা রাস্তায় গার্ডরেল থাকলে চালক সেই সুযোগটা পাবেন না। কিন্তু গতি বাড়িয়ে গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তায় এসে হঠাৎ গার্ডরেলের সামনে পড়লে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন।’’ ওই বাসিন্দাই জানাচ্ছেন, এপ্রিলের শেষে এক ভোরে একটি গাড়ি সম্পূর্ণ উল্টে যায়। দুর্ঘটনার অভিঘাতে গাড়ির চাকা খুলে গিয়ে বেশ কিছুটা দূরে পড়েছিল। ওই গাড়ির চালক এই গার্ডরেলের কারণেই দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির সামনে স্তূপীকৃত বালিও গার্ডরেল দিয়ে আটকানো রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, পুলিশ তাঁদের জানিয়েছে, রাস্তায় স্পিড-ব্রেকার না বসানো পর্যন্ত ওই গার্ডরেল তোলা যাবে না। তবে পথ নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তায় গার্ডরেল রাখা থাকলে তা কেন এলাকার স্কুলের সামনে রাখা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলছেন বাসিন্দারা। কারণ, ওই স্কুলের সামনের রাস্তায় মাত্র একটিই স্পিড-ব্রেকার হয়েছে।

এ নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা জানান, তাঁদের কাছে স্থানীয়েরা গার্ডরেল সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জানাননি। যদি তাঁরা এ বিষয়ে স্থানীয় থানাকে জানিয়ে থাকেন, তা হলে নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট থানা বিষয়টির উপরে নজর রাখছে। তবু থানার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement