Accidental Death Of Policemen

নিথর দেহ দেখেই ভেঙে পড়ল মৃত দুই পুলিশের পরিবার

বৃহস্পতিবার ভোরে বাগনানের বরুন্দা গ্রামে মুম্বই রোডে পুলিশের একটি টহলদারি গাড়িকে ধাক্কা মারে দশ চাকার একটি ট্রাক। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাগনান থানার সাব ইনস্পেক্টর সুজয় দাস (৪৩) এবং হোমগার্ড পলাশ সামন্ত।

Advertisement

সুব্রত জানা ও শান্তনু ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

স্বামীর নিথর দেহ শোয়ানো আছে অ্যাম্বুল্যান্সে। স্বামীর দেহ নিতে এসে সেই অ্যাম্বুল্যান্সেই মাথা ঠুকে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হোমগার্ড পলাশ সামন্তের স্ত্রী পিয়ালি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোরে বাগনানের বরুন্দা গ্রামে মুম্বই রোডে পুলিশের একটি টহলদারি গাড়িকে ধাক্কা মারে দশ চাকার একটি ট্রাক। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাগনান থানার সাব ইনস্পেক্টর সুজয় দাস (৪৩) এবং হোমগার্ড পলাশ সামন্ত। পরে তাঁদের দেহ আনা হয় বাগনান থানায়।

পলাশের বাড়ি বাগনানের দ্বিপামালিতা গ্রামে। বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। কয়েক বছর ধরে স্ত্রী পিয়ালি এবং পাঁচ বছরের মেয়ে পিয়াঞ্জনাকে নিয়ে বাগনানেই বাড়ি তৈরি করে থাকছিলেন। গ্রামের বাড়িতে থাকতেন তাঁর বাবা-মা। এ দিন পিয়ালির সঙ্গে পলাশের দেহ নিতে এসেছিলেন তাঁর বাবা এবং আত্মীয়েরা। তবে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না পিয়ালি।

Advertisement

থানা সূত্রের খবর, পলাশের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল বাগনান থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে। পরে হোমগার্ড পদে চাকরি পান। বিভিন্ন থানা ঘুরে বছর তিনেক আগে ফের বাগনান থানাতেই বদলি হয়ে আসেন। ভাল ব্যবহারের জন্য সহকর্মীদের প্রিয় ছিলেন বলে জানালেন আধিকারিকেরা।

এ দিন সকালে বেলুড়ের কামাখ্যা নাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে সুজয়ের বাড়িতে গিয়েও দেখা গেল, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। তাঁরা জানালেন, ২০০৩ সালে কলেজে পড়ার সময়ে কনস্টেবল পদে চাকরি পান সুজয়। ভাল ফুটবল, ক্রিকেট খেলতেন। খেলার সুবাদেই মিলেছিল চাকরি। কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হয়েছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন থানায় ছিলেন। পদোন্নতি পেয়ে মাস ছয়েক আগে এসআই পদে বাগনান থানায় যোগ দেন। সুজয়ের বছর তিনেকের একটি ছেলে ও বারো বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

বুধবার রাত ১১টার সময়ে শেষ বারের মতো পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল সুজয়ের। মোবাইলে সুজয়ের সঙ্গে কথা বলেছিল তাঁর মেয়ে। তখনই স্ত্রী ইনাকে সুজয় জানান, কাজে আছেন। ইনা বলেন, ‘‘কথাবার্তা বলে শুয়ে পড়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে ফের টহলে বেরোন। তাতেই এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল!’’ এ দিন ভোর ৫টায় সুজয়ের দাদা সঞ্জয়ের কাছে বাগনান থানা থেকে ফোন আসে। তাতেই জানানো হয় দুর্ঘটনার কথা। খবর পেয়ে বেলুড় থেকে বাগনানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সঞ্জয়েরা। পরিজনেরা জানান, সুজয় দিন পনেরো অন্তর এক
দিনের জন্য বাড়ি আসতেন। তবে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৮ ডিসেম্বর তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। এলাকায় মিশুকে হিসাবেই তাঁর পরিচিতি ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement