ভগ্নদশা: এমনই বেহাল অবস্থা কাশীপুর রোডের। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
টানা বৃষ্টিতে শহরের একাধিক রাস্তার দফারফা অবস্থা। কোথাও তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত, কোনও রাস্তায় আবার অনেকটা জায়গায় উঠে গিয়েছে পিচ। এর জেরে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই শহরের ৪৪টি বেহাল রাস্তার তালিকা-সহ কলকাতা পুলিশের তরফে পুরসভাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বৃষ্টিতে শহরের রাস্তার হাল যে খারাপ হচ্ছে, তা স্বীকার করে মেয়র জানিয়েছেন, পুজোর আগেই সমস্ত রাস্তার মেরামতির কাজ শেষ হবে।
উত্তরের বি টি রোড থেকে শুরু করে দক্ষিণের জেমস লং সরণি বা ডায়মন্ড হারবার রোড— চিত্রটা একই। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, রাস্তার একাধিক অংশে গর্ত তৈরি হওয়ায় পথ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বিশেষত, স্কুটার বা মোটরবাইক চালকদের ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা বেশি। পুলিশ জানিয়েছে, খানা-খন্দ ভরা রাস্তায় ইতিমধ্যেই দু’চাকার যান পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা বাড়ছে। উত্তর কলকাতার কাশীপুর রোডের অবস্থা খুবই খারাপ। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে পাইপ মেরামতির কাজের জন্য পুরো রাস্তাই গর্তে ভরে রয়েছে। এর জেরে সেখানে নিত্যদিন যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও, বেহাল রাস্তার তালিকায় রয়েছে মহাত্মা গান্ধী রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, বি টি রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের কিছু অংশ। বাদ যায়নি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, দেশপ্রাণ শাসমল রোড, জেমস লং সরণি, ডায়মন্ড হারবার রোড। কলকাতা পুলিশের দেওয়া বেহাল রাস্তার তালিকায় রয়েছে বোড়াল মেন রোড, চৌবাগা রোড এবং শিয়ালদহ উড়ালপুলের রাস্তাও।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উত্তর কলকাতার কাশীপুর রোডে পাইপলাইনের কাজ চলায় রাস্তার অবস্থা খারাপ রয়েছে। তবে পুজোর আগেই ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হবে। এর জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।’’ পুরসভার রাস্তা দফতর সূত্রের খবর, উত্তরের কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটের অবস্থাও শোচনীয়। ওই দু’টি রাস্তা সংস্কারের জন্য মেয়র পরিষদের বৈঠকে চার কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে।
রাস্তার শোচনীয় অবস্থার জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। অল্প বৃষ্টিতেই যানজট তৈরি হচ্ছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অবিলম্বে রাস্তাগুলি সংস্কার না করলে বিপদ বাড়বে। কারণ এক দিকে শহরে গাড়ির চাপ বাড়ছে, তাই খানা-খন্দ ভরা রাস্তায় দ্রুত গাড়ি চালাতে গিয়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।’’ কলকাতা পুরসভার রাস্তা দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি পূর্ত দফতরের তরফেও পুরসভার কাছে বেহাল রাস্তার তালিকা পাঠানো হয়েছে। শনিবারই কেইআইআইপি-র রিভিউ বৈঠকে শহরের সংযোজিত এলাকায় রাস্তাঘাটের শোচনীয় দশার জন্য পুরসভার ওয়ার্ড প্রতিনিধিদের সতর্ক হতে আবেদন জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, পাইপলাইন বা অন্য কোনও কাজে রাস্তার কোথাও গর্ত করার প্রয়োজন হলে কাজ শেষ হওয়ার পরে অবিলম্বে সেই গর্ত বুজিয়ে দিতে হবে। এর জন্য পুরপ্রতিনিধিদের ছবি তুলে ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠাতে হবে।