বিপদ-যাত্রা: খানা-খন্দে ভরেছে রাজারহাট রোড। রাজারহাট চৌমাথা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
সারা রাস্তায় বড় বড় গর্ত। সেই গর্ত আবার ভরে থাকছে জলে। তাই অনেক সময়েই বিপদ আন্দাজ করা যাচ্ছে না। যে কারণে কখনও উল্টে পড়ছেন বাইক-আরোহী, কখনও যন্ত্রাংশ ভেঙে বিকল হয়ে যাচ্ছে টোটো বা গাড়ি। এমনই বেহাল দশা রাজারহাট রোডের।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তার শেষ কবে খোলনলচে বদলে সংস্কার হয়েছিল, তা মনে করতে পারছেন না তাঁরা। বাগুইআটির কাছে জোড়ামন্দির থেকে শুরু হয়ে রাজারহাট চৌমাথা ধরে শাসনের দিকে চলে গিয়েছে এই রাজারহাট রোড। বিস্তীর্ণ ওই রাস্তার বহু জায়গা দীর্ঘদিন ধরে ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে। যার জেরে হামেশাই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
বাইকচালকদের অভিযোগ, যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে, তাঁরা এখন খানিকটা আন্দাজ করতে পারেন, কোথায় গর্ত রয়েছে। কিন্তু যাঁরা মাঝেমধ্যে ওই রাস্তায় বাইক নিয়ে যান, তাঁরা যে কোনও সময়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন। স্থানীয় এক দোকানদার জানান, কয়েক মাস আগেই এক বাইকচালক না বুঝে চালাতে গিয়ে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। গর্তে চাকা ঢুকে বাইক নিয়ে তিনি ছিটকে পড়েছিলেন রাস্তায়। সেই সময়ে পিছন থেকে একটি গাড়ি এসে গিয়েছিল। কোনও মতে রক্ষা পান ওই ব্যক্তি। এক টোটোচালকের কথায়, ‘‘সব চেয়ে খারাপ অবস্থা হয় বর্ষাকালে। গর্ত জলে ভরে থাকে। চলার সময়ে তা বুঝতে না পারায় জোরে গাড়ি গর্তে পড়ে সকেট-সহ অন্য যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যায়।’’
রাজারহাট রোড পূর্ত দফতরের অধীনে। দফতর সূত্রের খবর, নানা কারণে গত কয়েক বছরে তেমন ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ হয়নি। সব ক্ষেত্রেই তাপ্পি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে হেতু ওই রাস্তায় বাস, লরির মতো ভারী যানবাহন চলে, তাই সেই তাপ্পি খুব বেশি দিন টেকে না।
আধিকারিকেরা আরও জানাচ্ছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে রাজারহাট ও সংলগ্ন এলাকায় বড় বড় নির্মাণকাজ হচ্ছে। যে কারণে বালি, পাথর বোঝাই লরি রাতে ওই রাস্তা দিয়েই চলাচল করে। তার জেরেও রাস্তা ভেঙে গিয়েছে।
পূ্র্ত দফতর অবশ্য জানিয়েছে, আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজারহাট রোডের পুরোটাই নতুন করে তৈরির কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। আধিকারিকেরা জানান, ইতিমধ্যে অনেক জায়গাতেই রাস্তা নীচ থেকে চেঁছে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। শীঘ্রই সারাইয়ের কাজ শুরু হবে। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কাজে আগ্রহী সংস্থার সংখ্যা সীমিত। যে কারণে রাস্তা নির্মাণ-সহ অনেক কাজের ক্ষেত্রেই সময় বেশি লাগছে।’’