শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।
একটি মিছিল শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলার পথ ধরেছে। অন্যটি কয়েক ঘণ্টার তফাতেই মেডিক্যাল কলেজ থেকে রওনা হতে চলেছে ধর্মতলার উদ্দেশে। সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এই জোড়া মিছিলে নাকাল হতে পারেন মধ্য কলকাতার রাস্তায় থাকা যাত্রীরা। অন্তত এমনই সম্ভাবনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিয়ালদহের মিছিলটি শিক্ষক নিয়োগের আন্দোলনকারী চাকরি প্রার্থীদের। ট্রাফিকপুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতায় বিগত কয়েক মাস ধরে চাকরিপ্রার্থীদের যতগুলি আন্দোলন চলছিল, সেই সবক’টি আন্দোলনের আন্দালনকারীরাই যোগ দিতে চলেছেন ওই মিছিলে। চাকরি প্রার্থীরা ওই মিছিলকে মহা মিছিল বলে ঘোষণা করেছেন। পুলিশের অনুমান, এই মিছিলে না হক ৭০০ জনের জমায়েত হতে পারে। এমনকি, সংখ্যা এর থেকে বাড়তেও পারে। আপাতত ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, মিছিলটি মৌলালি এবং এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলা পৌঁছবে। এই মিছিলটির যাত্রা শুরু করে দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু পরে।
দ্বিতীয় মিছিলটি শুরু হবে বিকেল ৪টের সময়। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা যে আন্দোলন করছিলেন, তাঁদেরই মিছিল। মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু হয়ে এই মিছিলটিও এসে পৌঁছবে ধর্মতলায়। তবে তারা কোন রাস্তা ধরবে তা স্পষ্ট নয়। মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা আসার মূলত দু’টি রাস্তা। কলেজ স্ট্রিট থেকে নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট হয়ে লেনিন সরণী অথবা এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলা। এ ছাড়া আরও একটি রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে ধর্মতলা মোড়। তবে মিছিলটি যে রাস্তাই ধরুক তাতে বড় যানজটের আশঙ্কা থাকছে। কারণ বিকেল ৪টের পর থেকে ওই রুটগুলিতে অফিস ফেরৎ যাত্রী এবং বাস-ট্যাক্সি চলাচল বাড়তে থাকে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে পারেন নিত্যযাত্রীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজের মিছিলে ৩০০ জনের কাছাকাছি জমায়েত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, শিয়ালদহ স্টেশনে চাকরিপ্রার্থীদের মহা মিছিলে শুরু হয়েছে অভিনব প্রতিবাদ বিক্ষোভ। কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সাজে কেউ বা জীবন্ত লাশ সেজে নামেন মিছিলে। এসএসসি বোর্ডের চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েতেই প্রতিবাদকারীদের একজন মুখ্যমন্ত্রী সেজেছিলেন। ওই চাকরি প্রার্থীর নাম বিশাখা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বহুবার চিঠি দিয়েও লাভ হয়নি। স্বচ্ছ নিয়োগ হয়নি। আমরা এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চাই। প্রয়োজনে অনশনে বসতেও দ্বিধা করব না।’’
টেট প্রার্থীদের বিক্ষোভকারীরা সেজেছিলেন জীবন্ত লাশ। ২০১৫ সালের টেটের পরীক্ষার্থী সঞ্জয় কুমার দলুই, পলাশ বিশ্বাসরা জানিয়েছেন, সাদা খাতা জমা দিতে চাকরি পেয়েছেন অনেকে। অথচ আমাদের যাঁদের চাকরি দরকার, যাঁদের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে আছে পরিবারের সদস্যরা, তাঁরা ৮ বছর ধরে বঞ্চিত।