—ফাইল চিত্র।
চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, ওই অফিসারের বিরুদ্ধে ডিজি ব্যবস্থা নেবেন। আজ, মঙ্গলবার ব্যারাকপুরের নগরপালকে আদালতে চার্জশিট পেশ করতে হবে। ওই ঘটনায় সেনা-চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন বিচারপতি সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, গ্রেফতারের পরে ৫৯ দিন হয়ে গিয়েছে। ৬০ দিন পেরিয়ে গেলে অভিযুক্তের যাতে জামিন পেতে সুবিধা হয়, তদন্তকারী অফিসার তার জন্য অপেক্ষা করছেন কি না, সে প্রশ্নও কার্যত তুলেছে আদালত। পুলিশ যে আদালতের লিখিত নির্দেশ পালন করছে না, সে কথাও উঠে এসেছে।
ব্যারাকপুর সেনা ছাউনির অফিসার নিবাসে প্রজ্ঞাদীপার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশ আত্মহত্যার তত্ত্ব বললেও প্রজ্ঞাদীপার শরীরে থাকা একাধিক আঘাতের চিহ্ন সম্পর্কে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক নীরব কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছিল হাই কোর্টে। এই ব্যাপারে এসএসকেএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে বলেছিল আদালত। ১০ অগস্ট তদন্তকারী অফিসারকে এসএসকেএম হাসপাতালে ওই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হলেও তিনি ১৮ অগস্ট রিপোর্ট জমা দেন। তার ফলে এ দিন এসএসকেএম কোনও রিপোর্ট আদালতে দিতে পারেনি।
প্রজ্ঞাদীপা নিজে চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ব্যারাকপুরের সেনা-চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর সম্পর্ক ছিল। তাঁরা একত্রে থাকতেন। প্রজ্ঞাদীপার পরিবারের আইনজীবী লিটন মৈত্র অবশ্য আদালতে জানিয়েছেন, কৌশিক এবং প্রজ্ঞাদীপার বিয়ে হয়েছিল। এই মামলায় পুলিশি তদন্তে যে নানা ফাঁকফোকর রয়েছে, সে ব্যাপারেও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। প্রজ্ঞাদীপার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকলেও তার ব্যাখ্যা পুলিশি তদন্তে নেই বলেও জানিয়েছিলেন। বিচারপতিও প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, দেহে ১৪টি আঘাতের চিহ্ন থাকলেও কেন খুনের ধারা যুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়নি? গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হলে আঘাতের চিহ্ন কী ভাবে এল, সেই প্রশ্নও আদালত তুলেছিল। বস্তুত, ব্যারাকপুর পুলিশের বদলে তদন্তভার সিআইডি বা সিবিআইকে দেওয়ার আর্জি আদালতে জানিয়েছে মৃতার পরিবার।