—ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পুলিশ বাধা পেয়েছিল ৯ অগস্ট রাতে। অভিযুক্ত ছাত্রদের প্রশ্ন, সেই অভিযোগে মামলা করতে পুলিশের ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগল কেন? বুধবার আদালতে অভিযুক্ত ছাত্রদের আইনজীবীরা এই প্রশ্ন তুলেছেন। যার পাল্টা ছাত্রদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে পুলিশও। তারা বলেছে, বাধা না পেলে হয়তো ওই ছাত্রকে সেদিন বাঁচানো যেত।
যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার যাদবপুরের প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষকে আদালতে পেশ করা হয় বুধবার। পাশাপাশি, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার যাদবপুরের দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনতোষ ঘোষকেও আদালতে তোলা হয়। শুনানিতে অভিযুক্তের আইনজীবীরা পুলিশের অভিযোগের দিন ক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা বলেন, পুলিশ অভিযোগ করেছে, তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছে .যাদবপুরের ছাত্র এবং প্রাক্তনীরা। যদি তা-ই হবে, তবে সেই অভিযোগ দায়ের করতে পুলিশের এত সময় লাগল কেন? ৯ অগস্টের ঘটনার পর গত ১৩ অগস্ট এ বিষয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত হয়। তার আগে কী করছিল পুলিশ?
এই প্রশ্নের পাল্টা সরকার পক্ষের কৌঁসুলী সৌরীন ঘোষাল জানান, পুলিশকে শুধু হস্টেলে ঢুকতেই বাধা দেওয়া হয়নি, যে হাসপাতালে ওই আহত ছাত্রের চিকিৎসা চলছিল, সেখানেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সরকারি আইনজীব বলেন, সেদিন যদি পুলিশকে বাধা না দেওয়া হয় তা হলে হয়ত বাঁচানোও যেতে পারত ওই ছাত্রকে। সেটা সম্ভব হয়নি যাদবপুরের ছাত্ররা পুলিশকে হাসপাতালের ওই ঘরে ঢুকতে না দেওয়ায়। তবে সরকারি আইনজীবীর এই মন্তব্যেরও পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা।
বুধবার আদালতে জয়দীপের পক্ষে হাজির ছিলেন আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী। এ ছাড়া দীপশেখরের হয়ে আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায় এবং মনোতোষের পক্ষে আইনজীবী ওমি হক সওয়াল করেন। পুলিশ ওই ছাত্রকে বাঁচাতে পারত শুনে তাঁরা বলেন, ‘‘পুলিশ কে আটকানোর সঙ্গে চিকিৎসার কী সম্পর্ক। এতে চিকিৎসায় তো কোনও বাধা হতে পারে না!’’
বুধবার এই মর্মে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীর জামিনের আবেদন করেছেন আইনজীবীরা। তাদের যুক্তি, পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন অভিযুক্তরা। হস্টেলের ১০৪ নম্বর রুমে পাওয়া ডায়েরি কার লেখা জানতে পুলিশের তরফ থেকে আগের দিন হাতের লেখা পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছিল। দীপশেখর তাঁর হাতের লেখার নমুনাও দিয়েছেন। অন্য দিকে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি পুলিশ। তাই জামিন দেওয়া হোক। আদালত অবশ্য সন্ধে পর্যন্ত কোনও নির্দেশ দেয়নি।