চিকিৎসার গাফিলতির মৃত্যু হয় এক তরুণের। প্রতীকী ছবি।
রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা এম আর বাঙুর হাসপাতালে। রবিবার সকালে এর জেরে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরিজনেরা জোর করে হাসপাতালের ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতাল চত্বরে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। রোগীর পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, কসবার আমন সাউ (১৮) নামে এক তরুণের এ দিন মৃত্যু হয় ওই হাসপাতালে। তিনি সেখানে বার্ন ইউনিটে ভর্তি ছিলেন। মঙ্গলবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় তাঁকে সেখানে ভর্তি করানো হয়। গত কয়েক দিনে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আমনের পরিবারকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হলে পরিজনেরা হাসপাতালের গেটে চড়াও হন। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জোর করে হাসপাতালের ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করেন বলেও অভিযোগ। মৃতের বাবা, পেশায় গাড়িচালক কার্তিক সাউ বলেন, ‘‘বজবজে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল ছেলে। সেখানে খেলতে খেলতে রেললাইনের ধারে একটি মালগাড়ির উপরে বন্ধুদের সঙ্গে উঠে পড়েছিল ও। তখনই বিদ্যুতের তারের ছোঁয়া লেগে নীচে পড়ে যায় আমন।’’ দ্রুত তাঁকে বজবজের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা এম আর বাঙুরে নিয়ে যেতে বলেন। কার্তিকের দাবি, ‘‘কয়েক দিন ধরে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, ওর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এ দিন হঠাৎ জানানো হয়, ছেলে আর নেই। এর পরে মাথার ঠিক ছিল না। অবস্থার এতটাই অবনতি হলে আগে জানাল না কেন? প্রয়োজনে অন্য কোথাও নিয়ে যেতাম।’’
ওই হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর যদিও বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। হাই ভোল্টেজ তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছেলেটির শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। প্রথম থেকেই খুব খারাপ অবস্থা ছিল। চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি।’’ আমনের ছোট বোন ও মা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তবু মা গৌরী বললেন, ‘‘কার গাফিলতি জানি না। কিছু করলেও তো ছেলেটা আর ফিরবে না। এত দুরন্ত, কথা শুনত না। দুরন্ত স্বভাবের জন্যই সব শেষ হয়ে গেল।’’