প্রতীকী ছবি।
বড়বাজারের নুরমল লোহিয়া লেনের বিপজ্জনক বহুতলের একাংশ মঙ্গলবার রাতে ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল এক কিশোরের। আহত এক জন। দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক ঘোষিত হওয়ার পরেও সেটি বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর। কেন? কলকাতা পুরসভার এক কর্তা জানাচ্ছেন, এটা নতুন নয়। বিশেষত ওই এলাকায়।। পুর তথ্যও বলছে, বড়বাজার এলাকার শ’খানেক বাড়িই বিপজ্জনক। পুর আইন মেনে প্রায় ৪০টি পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন নির্মাণের অনুমতি দিলেও তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানাচ্ছেন বিল্ডিং দফতরের কর্তারা। ফলে ওই সব পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।
পুর বিল্ডিং দফতরের দাবি, বড়বাজারের যে বাড়িগুলি বিপজ্জনক হিসেবে ঘোষিত, তাদের মালিককে পুরসভা নোটিস দেওয়া ছাড়াও বাসিন্দাদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। তা হলে ওই বাড়িগুলির মেরামতি বা পুনর্নির্মাণ হল না কেন?
পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ বাড়িতেই বহু দিন ধরে নামমাত্র ভাড়ায় রয়েছেন ভাড়াটে। পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় তাঁদের সরানো যাচ্ছে না। ফলে পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন নির্মাণ করলে বাড়তি জায়গা (এফএআর) দেওয়ার যে ঘোষণা করেছিল পুরসভা, তাতেও লাভ হয়নি।
ওই বাড়তি জায়গায় প্রোমোটার বা মালিক নির্মাণ করতে পারতেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভাড়াটে সমস্যায় আটকে থাকছে অতিরিক্ত জায়গা পাওয়ার ওই বিশেষ সুযোগ।
পাশাপাশি অনেক মালিকের আশঙ্কা, প্রোমোটার বাড়ি তৈরির পরে তাঁদের নির্দিষ্ট অংশ ফেরত না-ও দিতে পারেন। এমনটাই জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকেরা। অনেক বাড়ির ক্ষেত্রে আবার সব হয়েও দমকলের ছাড়পত্রের জন্য আটকে আছে। এই জট কাটাতে অবশ্য পুর কর্তৃপক্ষ এবং দমকল যৌথ ভাবে আইন পরিবর্তন করার প্রস্তাব রাজ্য সরকারকে দেবে বলে আগেই জানিয়েছে।
বুধবার বিল্ডিং দফতরের আধিকারিকেরা ১৫ নুরমল লোহিয়া লেনের বহুতলটি পরিদর্শন করেন। ঘটনার রাত থেকেই বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙে দেওয়া শুরু হয়েছে। বিল্ডিং দফতর সূত্রের খবর, এই বাড়ির তিন জন মালিক। তাঁদের শরিকি সমস্যা থাকায় মেরামতি বা পুনর্নির্মাণ হয়নি। তবে পুর কর্তৃপক্ষ মালিককে ফের নোটিস পাঠাবেন বলেও জানা গিয়েছে।