লাঠালাঠি: বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নবান্ন অভিযানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। সোমবার, ডাফরিন রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলির নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল ময়দান চত্বরে। শিক্ষক সংগঠকদের অভিযোগ, আদালতের অনুমতি নিয়েই তাঁরা নবান্ন অভিযান শুরু করলেও পুলিশ তাঁদের আটকে ফের শহিদ মিনার চত্বরের ময়দানে ফিরিয়ে দেয়। সেখানে ওই শিক্ষকেরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষকদের একাংশ সোমবার বিকেল থেকে অনশনও শুরু করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ, শিক্ষাবন্ধু যৌথমঞ্চ, পার্শ্ব-শিক্ষক সংগঠন, এসএসকে এমএসকে শিক্ষক সংগঠন, বৃ্ত্তিমূলক শিক্ষক সংগঠন, কম্পিউটার শিক্ষকদের সংগঠন, মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠন- সহ ১৩টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা সোমবার দুপুরে জড়ো হয়েছিলেন শহিদ মিনারের ময়দান চত্বরে। সেখান থেকেই তাঁরা মিছিল করে নবান্নের দিকে যাত্রা শুরু করেন বিকেল তিনটে নাগাদ। প্রথমে পুলিশ তাঁদের বাধা দিতে গেলে শিক্ষকেরা ব্যারিকেড টপকে চলে যান। শেষে পুলিশ ফের ডাফরিন রোডের কাছে তাঁদের আটকে দেয়। সেখানেই শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি।
ঘটনার জেরে কয়েক জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ার পাশাপাশি কয়েক জন পুলিশকর্মীও আঘাত পান। পুলিশ বিক্ষোভরত শিক্ষকদের একাংশকে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে দেয়। কিছু ক্ষণ পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ বিক্ষোভরত শিক্ষকদের ফের শহিদ মিনারের ময়দান চত্বরে ঢুকিয়ে দেয়।
শিক্ষক সংগঠনগুলির পক্ষে নন্দদুলাল দাস জানান, সমকাজে সমবেতনের সাপেক্ষে শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে সর্বোচ্চ বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা, সরকারি কর্মীদের মতোই পেনশন, অবসরকালীন সুবিধা, অনুমোদনহীন মাদ্রাসাকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদান, শিক্ষাবন্ধুদের বকেয়া প্রদান-সহ ২০ দফা দাবি নিয়ে তাদের এ দিন নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনা ছিল।
নন্দদুলালবাবু বলেন, ‘‘সরকার অভিযান আটকানোর চেষ্টা করে। আমরা আদালত থেকে অনুমতি আদায় করে নিই। তা সত্ত্বেও পুলিশ আমাদের আটকে লাঠি চালায়। কয়েক জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
শিক্ষকেরা নবান্ন অভিযানে বাধা পেয়ে শহিদ মিনার চত্বরে ফিরে এসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্না উঠবে না। এর পরে বিকেল পাঁচটা থেকে প্রায় ৫০০ জন শিক্ষক অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেন। কয়েক জন চলে গেলেও বেশির ভাগই রাতে সেখানে থেকে যান।
শিক্ষকদের এই ধর্না অবস্থান নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষকদের দাবি যতটা সম্ভব বাস্তবসম্মত ভাবে পূরণ করা যায়, তা ধাপে ধাপে করা হচ্ছে।’’