ছবি: সংগৃহীত
ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ট্যাক্সি ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পরে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল এআইটিইউসি অনুমোদিত ‘ট্যাক্সি অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’। ডিজ়েলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে ট্যাক্সিচালকেরা কী ধরনের সমস্যায় পড়েছেন, সে কথা জানিয়ে আগেই সংগঠনের তরফে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এ দিন সংগঠনের আহ্বায়ক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতরকে একাধিক চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের দাবি বিবেচনা করা হয়নি। এর ফলে বাধ্য হয়েই যে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি, সে কথাই এ দিনের চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’
নওলকিশোর এ দিন জানান, সরকার করোনা পরিস্থিতিতে ট্যাক্সির ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা না করায় পরিষেবা সঙ্কটে পড়েছে। যাত্রী কম থাকায় ট্যাক্সিচালকদের চরম অর্থকষ্টে দিন কাটছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ধর্মঘট ডাকার পাশাপাশি পরিবহণ দফতর অভিযান করা হবে। প্রয়োজনে ট্যাক্সিচালকেরা গ্রেফতার বরণ করবেন।
শহরের অন্যান্য কয়েকটি ট্যাক্সি সংগঠন ভাড়া বৃদ্ধির দাবি সমর্থন করলেও ধর্মঘট ডাকার পক্ষপাতী নয়। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেনস ইউনিয়ন’ সরাসরি ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বলেন, ‘‘আমরা যে কোনও রকম ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। করোনা আবহে পরিষেবা ব্যাহত করে কোনও আন্দোলন আমরা সমর্থন করব না।’’
এ দিনই আবার সিটু অনুমোদিত অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সংগঠন পরিবহণ ভবনের সামনে একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানান, করোনা আবহে ডিজ়েলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে চালকেরা নানা ভাবে সঙ্কটে। এক দিকে যাত্রী-সংখ্যা অস্বাভাবিক রকম কমে গিয়েছে। অন্য দিকে, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি তাদের কমিশন বাবদ ২৫ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়ায় চালকদের আয় তলানিতে। এই অবস্থায় কমিশনের হার কমানোর পাশাপাশি অ্যাপ-ক্যাবে কিলোমিটার-পিছু ২০ টাকা ভাড়া ধার্য করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।
সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি গাড়িতে উপযুক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করেনি বলেও ইন্দ্রজিৎবাবুর অভিযোগ। নিয়মিত গাড়ি স্যানিটাইজ় করার ব্যবস্থা না থাকায় চালকদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে। লকডাউন পর্বে গাড়ি না চললেও রোড ট্যাক্স বা পথকর দিতে হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। রাজ্য সরকার পথকর দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমার মেয়াদ বাড়িয়েছিল। কিন্তু গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কোনও ছাড় দেয়নি। ওই ছাড় না মেলায় পথকর দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা বৃদ্ধির সুবিধা অনেকেই নিতে পারেননি বলে অভিযোগ। অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সরকারি স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার দাবিও উঠেছে।