বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দিলেন তাপস মণ্ডল? — ফাইল ছবি।
আদালতে ঢোকার পথে জানিয়েছিলেন বিচার ব্যবস্থার উপর তাঁর পূর্ণ আস্থার কথা। কোর্ট থেকে বেরোনোর পথে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সেই তাপস মণ্ডলই জানালেন, তাঁর মনে হচ্ছে, এজলাস বদলের জেরে মামলা যেন পিছিয়ে যাচ্ছে!
শনিবার তাপসকে হাজির করানো হয়েছিল আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। ঢোকার পথে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গে। সেই সময় গাড়ি থেকে নামতে নামতে তাপস বলেছিলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থা এবং তদন্তকারী সংস্থার উপর সম্পূর্ণ ভরসা আছে। আশা করি সঠিক তদন্ত হবে।’’ তার পরেই আদালতে ঢুকে যান তিনি। আদালত থেকে বেরোনোর সময় আবার সংবাদমাধ্যম একই প্রশ্ন করে তাপসকে। এ বার অবশ্য ভিন্ন জবাব দেন তাপস। প্রশ্ন ছিল, কুন্তল ঘোষের মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কী বলবেন? তাপস বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু বলব না। এতে আমার মনে হয়েছে মামলাটা যেন পিছিয়ে যাচ্ছে। ত্বরান্বিত হচ্ছিল, পিছিয়ে যাচ্ছে। শ্রদ্ধেয় বিচারপতি সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই, ব্যস।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে দু’টি মামলা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার একটিতে বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ অন্যতম অভিযুক্ত। শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল কুন্তলকেও। স্বভাবতই তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ সব ক্ষেত্রে কুন্তল কিছু বলবেন, সেই প্রত্যাশা ছিল। বস্তুত, আদালত চত্বরে ঢোকা-বেরোনোর সময় নিয়মিত ভাবে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে দেখা যায় কুন্তলকে। কিন্তু শনিবার যখন তাঁর প্রতিক্রিয়া জানার জন্য প্রশ্ন করা হয়, তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নীরব। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়েই কুন্তল তড়িঘড়ি ঢুকে যান আদালতের ভিতরে।
প্রসঙ্গত, কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত ওই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর চলতি মাসেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। এর পর শুক্রবার মামলা থেকেই সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
চিঠিতে কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তাঁকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছেন। এ নিয়ে কলকাতার একটি থানায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান তিনি।
আবার শহিদ মিনারে তৃণমূলের সভা থেকে অভিষেক অভিযোগ করেছিলেন, তদন্তকারী সংস্থা কুণাল ঘোষ, মদন মিত্রদের তাঁর নাম বলানোর জন্য চাপ দিয়েছিল। দু’টি ঘটনাই আদালতের গোচরে আসার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর লিখিত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি প্রয়োজন মনে করলে অভিষেককে এ বিষয়ে জেরা করতে পারে। অভিষেক তাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে এই মামলা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।