লালবাজার জানিয়েছে, বর্ষবরণ ও পয়লা জানুয়ারি উপলক্ষে শনি ও রবিবার বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফাইল ছবি।
বছর শেষে মত্ত চালকদের দাপট আটকানো গেল না এ বারেও। শুধু তা-ই নয়, বর্ষবরণের রাত এবং বছরের প্রথম দিনে মত্ত অবস্থায়গাড়ি চালিয়ে পথের বিধি ভাঙার ঘটনায় গত বছরকেও টেক্কা দিলএ বছর।
লালবাজার জানিয়েছে, বর্ষবরণ ও পয়লা জানুয়ারি উপলক্ষে শনি ও রবিবার বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রবিবার মত্তঅবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে ১০১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শনি ও রবিবার মিলিয়ে মোটরযান আইনের ১৮৫ নম্বর ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হয় ২৮০ জনের বিরুদ্ধে। গত বছর এই দু’দিনে মোট ২৩২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
এই দু’দিনে মোট ৭৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ছ’লিটার মদ। বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে রবিবার ব্যবস্থা নেওয়া হয় ১০৫ জনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া, বিনা হেলমেটে ও একাধিক জনকে পিছনে বসিয়ে মোটরবাইক বা স্কুটার চালানোর অভিযোগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় অনেকের বিরুদ্ধে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘নজরদারি চালাতে তিন হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মীকে রাস্তায় নামানো হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার খবর পেলে অথবা আইন ভাঙার বিষয় নজরে এলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
অন্য দিকে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কলকাতা পুলিশ এলাকায় দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা, দুই-ই কমেছে।কমেছে আহতের সংখ্যাও। ২০২১-এ দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৮৫ এবং ১৯৬। কিন্তু ২০২২-এ তা কমে হয়েছে যথাক্রমে ১৭৮এবং ১৮৫।
২০২০ এবং ’২১ সালেলকডাউন হয়েছিল বিভিন্ন সময়ে। সেই কারণে ২০১৯ সালের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে ২০২২ সালের। কারণ, তখন সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। তাতেও গত বছর দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ডি সি (ট্র্যাফিক) সুনীল যাদবের দাবি, পুলিশি নজরদারির জন্যই দুর্ঘটনা ও মৃত্যু কমেছে। গত বছর দুর্ঘটনায় মারা যান ১৮৫ জন। যাঁদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পথচারী ও ২৫ শতাংশ বাইক আরোহী।
২০২২ সালে দুর্ঘটনা এবং তাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমা নিয়ে বিভিন্ন সমীক্ষা করেছে লালবাজার। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রথমত, বাইক আরোহীদের মধ্যে হেলমেট পরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিসেম্বরেসেই প্রবণতা বেড়েছে প্রায় ৯৪ শতাংশ। দ্বিতীয় কারণ হিসাবে উঠে এসেছে, বেপরোয়া গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়া। তৃতীয় কারণ, মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। গত বছর ২৬ হাজার ৪১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য।তার আগের তিন বছরে ওই সংখ্যা ছিল ১৩ হাজারের কিছু বেশি।