ছবি: পিটিআই।
ভরদুপুরে হাসপাতালের আটতলার কার্নিশে ঘণ্টা দেড়েক বসে থাকার পর ঝুলতে ঝুলতে হাত ফস্কে পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে উদ্ধার করে ওই হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানেই রয়েছেন সুজিত অধিকারী নামে ওই রোগী। তার পর থেকে আধবেলা পেরিয়ে গিয়েছে। শনিবার মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই ঘটনার কেমন রয়েছেন সুজিত?
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সুজিত। অভীক রায়চৌধুরী নামে এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অত উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ায় সুজিতের মাথায় আঘাত রয়েছে। বুকেও গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। দেহের বহু জায়গায় আঘাত পেয়েছেন সুজিত।
দিনেদুপুরে খাস কলকাতার এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী-নার্সদের নজর এড়িয়ে কী ভাবে জানলা দিয়ে বেরিয়ে এক রোগী আটতলার কার্নিশে চড়ে বসলেন? এ ঘটনার পর রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তাঁদের খবরাখবর দেওয়া হচ্ছে না বলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ। সুজিতের এক আত্মীয়স্বজনদের কথায়, ‘‘রোগীর অবস্থা এখন কী রকম, হাসপাতাল থেকে ঠিক মতো খবরই পাচ্ছি না। সুজিত কেমন আছে, তা জানি না।’’
গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সুজিতের পিসি বাসন্তী অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘জানলা ভেঙে পেশেন্ট যখন একলা বেরোচ্ছিল, তখন হাসপাতালে সবাই কোথায় ছিল? কেউ ওর খেয়াল রাখেনি কেন? জানলা দিয়ে ও বেরিয়ে গেল কী করে?’’
কেন সুজিত এ রকম আচরণ করলেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। সুজিত স্নায়ুরোগে ভুগলেও তাঁর এই আচরণের যৌক্তিকতা খুঁজছেন তাঁর আত্মীয়েরা। বাসন্তীর কথায়, ‘‘ডাক্তার চিরঞ্জিৎ দাস বলেছিলেন, ওর মাথায় কোনও প্রবলেম নেই। যে অবস্থায় এসেছিল, তার থেকে ভাল রয়েছে। আগামিকাল ছুটি দিয়ে দেব বলেছিল ডাক্তার। আজ আমরা ওকে নিতে এসেছিলাম। বুঝতে পারিনি, এ রকম হয়ে যাবে!’’
মাসখানেক আগে স্ত্রী মৃত্যুর কারণেই কী সুজিতের এই আচরণ? সে ‘তত্ত্ব’ মানতে নারাজ বাসন্তী। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায় ওর মা মারা গিয়েছে। আমরাই ছোট থেকে ওকে মানুষ করেছি। ২৫ দিন হল ওর বৌ মারা গিয়েছে। তবে স্ত্রী মারা যাওয়ার দু’দিন পরেই নিজের দোকান খুলেছিল। দিন দুয়েক আগে ২২ তারিখে মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। (ঘটনার সময় সুজিতের) দুই ছেলেকে দিয়ে ভিডিয়ো কলও করা হয়। যাতে ছেলেদের দেখে ও (হাসপাতালের ঘরে) চলে আসে। তা-ও আসেনি।’’