শিশুটিকে যে দু’জন উদ্ধার করেছিলেন, তাঁদের পুরস্কৃত করছেন পুলিশ কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
থানা এলাকার সীমানার বাইরের ঘটনা বলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করায় ফের সাসপেন্ড হলেন কলকাতা পুলিশের এক অফিসার।
সম্প্রতি মডেল এবং অভিনেত্রী ঊসষী সেনগুপ্তকে বাইকে সওয়ার যুবকদের হাতে হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে দু’টি থানার আধিকারিকেরা নিতে চাননি। তাঁদেরও যুক্তি ছিল, ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার বাইরের। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে সাসপেন্ড করা হয় দুই সাব ইনস্পেক্টরকে। ওই ঘটনার জের ধরেই নগরপাল অনুজ শর্মা স্পষ্ট নির্দেশ জারি করেছিলেন, ‘জুরিসডিকশন’ বা এলাকা না দেখে পুলিশকে অভিযোগ নিতে হবে। সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আইনি পরিভাষায় যাকে বলা হয় জিরো এফআইআর।
নগরপালের নির্দেশের পরও যে কলকাতা শহরের অনেক থানাতেই নিচুতলার আধিকারিকদের অভ্যাস বদলায়নি তা আরও এক বার প্রমাণিত রবিবার রাতের একটি ঘটনায়।
আরও পড়ুন: বিজেপি-কে বাড়তেই হবে: কেশব ভবনের ‘বেনোজলাতঙ্ক’ নস্যাৎ করে সাফ জানাচ্ছে নাগপুর
কড়েয়া থানা এলাকার তিলজলা রোডের বাসিন্দা বড়ো মল্লিক। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে বড়ো মল্লিকের স্ত্রী বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ করেন যে তাঁর তিন বছরের কন্যাসন্তানকে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে পার্ক সার্কাস ময়দানে ছেড়ে দিয়ে এসেছে তাঁর স্বামী। পারিবারিক অশান্তির জেরেই বড়ো ওই কাজ করে বলে পুলিশকে জানান বড়োর স্ত্রী। পুলিশকে ওই মহিলা জানান যে, তিনি ওই সময়ে বাধা দিতে গেলে বড়ো তাঁকে মারধর করে জোর করে বাড়ি নিয়ে যায়।
কিছু ক্ষণ পরে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে নিজের মেয়েকে পাননি বড়োর স্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, বেনিয়াপুকুর থানার ওই সময়ের কর্তব্যরত আধিকারিক অনিন্দ্য গিরি অভিযোগ না নিয়ে বড়োর স্ত্রীকে জানান যে অপরাধ হয়েছে কড়েয়া থানা এলাকায়। সেখানে গিয়েই অভিযোগ দায়ের করতে হবে।
ওই মহিলা এর পর কড়েয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। দিনভর তল্লাশির পর পুলিশ ট্যাংরা থানা এলাকা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে। দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের ডিসি অজয় প্রসাদ জানিয়েছেন, ফৈয়াজ খান এবং আদিল সাকিল নামে দুই ব্যক্তি ওই শিশুটিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পান এবং ট্যাংরা থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই সূত্র ধরেই সোমবার বিকেলে পাওয়া যায় ওই শিশুকে। পুলিশ ওই দুই ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করেছে।
আরও পড়ুন: বাস্তবের ‘নায়ক’ ফিরহাদ, ফোনে অভিযোগ শুনেই দ্রুত সমাধানের নির্দেশ, খাতায় নোট নিলেন পুর অধিকারিকেরা
কিন্তু সেই সঙ্গে বেনিয়াপুকুর থানার ওই আধিকারিকের ভূমিকাও প্রকাশ্যে আসে। এর পরই ওই সাব ইনস্পেক্টর অনিন্দ্য গিরিকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশ অভিযুক্ত বড়ো মল্লিককে গ্রেফতার করেছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।