হাতেকলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির উপযুক্ত করে তোলা হয় অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: শাটারস্টক।
বিশ্ব মানের পরিকাঠামো, অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে তোলার উপযোগী যাবতীয় কোর্স এবং হাতেকলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির উপযুক্ত করে তোলা, সব কিছুই যদি মেলে একই ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে? স্বপ্নের মতো শোনাচ্ছে? বাস্তবে তার হদিস পাবেন অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাডামাস-এর বিটেক কোর্সগুলি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য।
যুগোপযোগী স্পেশালাইজেশন:
একাধিক প্রতিষ্ঠানের ভিড়ে অ্যাডামাসকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয় সর্বাধুনিক এবং সাম্প্রতিক বিষয়গুলিতে স্পেশালাইজেশনের সুবিধা এবং বিভিন্ন শাখার কোর্স থেকে পছন্দসই বিষয় বাছাই করে নেওয়ার সুযোগ। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়ুয়া হয়েও ব্লকচেন টেকনোলজির পাঠ্যক্রম বেছে নিতে কোনও বাধা নেই এখানে। তেমনই আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স অ্যান্ড মেশিন লার্নিং, সাইবার সিকিউরিটি, সাইবার ফরেন্সিক-এর মতো আধুনিক এবং জনপ্রিয় কোর্স নিয়ে পড়ার সুযোগও রয়েছে।
ইলেক্ট্রনিকস অয়ন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে স্পেশালাইজেশনের সুযোগ রয়েছে ইন্টারনেট অফ থিংস কিংবা রোবোটিকস-এর মতো বিষয়ে। আবার মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে স্পেশালাইজেশন করা যায় ডিজাইনিং-এ। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সঙ্গে সোলার এনার্জি-র পাঠ্যক্রম কিংবা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সঙ্গে স্মার্টসিটি ডেভেলপমেন্ট-এর যুগলবন্দিও থাকতে পারে বিষয় বাছাইয়ে।
অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য শমিত রায়ের কথায়, “বেশ কিছু অন্য রকম বিষয়ে স্পেশালাইজেশন করার সুযোগ রয়েছে আমাদের পাঠ্যক্রমগুলোতে। কারিগরি শিক্ষা এখন তো আর শুধু তথ্যের আদানপ্রদানেই সীমাবদ্ধ নেই। আধুনিকতম প্রযুক্তি শিখে নেওয়াটাও জরুরি। সেকথা মাথায় রেখেই আমরা এই বিষয়গুলো চালু করছি।”
এ বছর সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয় বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বেছে নেওয়ারও সুযোগ পাবেন আবেদনকারীরা। এই কোর্সটিতে জিনোমিক্স, বায়ো ইন্সট্রুমেন্টেশন, প্রস্থেটিকস এবং ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস-এর মতো বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। “অতিমারীর এই পরিস্থিতিতে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনেকখানি চাহিদা তৈরি হয়েছে। সে কারণেই তা নিয়ে এ বছর বিটেক কোর্স চালু করা হল,” বলছেন শমিতবাবু।
এ সবের পাশাপাশিই বিবিএ এবং এমটেক করার সুযোগ থাকছে ফিনটেক, গেমিং বা অ্যানিমেশন-এর মতো আগামীদিনে মানানসই কিছু বিষয়েও।
বিভিন্ন শাখার বিষয় মিলিয়ে প্রোজেক্ট:
পাঁচটি সেমেস্টার জুড়ে হাতেকলমে প্রোজেক্ট করার সুযোগও রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। প্রথম বছরে বৈদ্যুতিক গাড়ি, ড্রোন বা স্মার্টসিটির পরিকাঠামোর উপর কাজের সুযোগ বেছে নেওয়া যায়। পরবর্তী পর্যায়ে আপনার বেছে নেওয়া ক্ষেত্র অনুযায়ী নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের ব্যবস্থা থাকবে।
অ্যাডামাসে আচার্যের দফতরের সহ-অধ্যক্ষ প্রদীপ ভৌমিক বলেন, “এ ধরনের প্রোজেক্ট বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ প্রচলিত। পড়ুয়ারা যা পাঠ্যক্রমে শেখে, তা হাতেকলমে প্রয়োগের ক্ষেত্রেও তাদের পারদর্শী করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলাই এর লক্ষ্য। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ধাঁচে আমাদেরও আগামী দিনে লাইভ প্রোজেক্ট চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
সফট স্কিল গঠন:
আপনার গুণাগুণ বা শখ, অর্থাৎ সফট স্কিল গড়ে তোলা ও ঘষেমেজে নেওয়ারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। নির্দিষ্ট কোর্সে পড়াশোনার পাশাপাশিই অংশ নেওয়া যায় নাটক, বিতর্ক, সৃজনশীল ভাবনা, চলচ্চিত্র তৈরি, ক্যুইজ, বক্তৃতার মতো বিভিন্ন বিষয়ে। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকিউ ল্যাব এবং কেরিয়ার ডেভেলপমেন্টের যৌথ উদ্যোগে পড়ুয়াদের ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলায় সহায়তার ব্যবস্থাও রয়েছে। মানুষ ও তাঁদের প্রয়োজন বোঝার স্বার্থে বিভিন্ন সামাজিক কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে ডিজাইন থিঙ্কিং-এর একটি ক্রেডিট কোর্সে নথিভুক্তিও বাধ্যতামূলক।
সহজ ভাবধারা:
নির্দিষ্ট কোর্স ও বিভাগে স্পেশালাইজেশন করতে না চাইলে অ্যাডামাস গ্রুপের ১০টি প্রতিষ্ঠানের যে কোনও একটি থেকে মাইনর বিষয় বেছে নেওয়া যায় তিনটি সেমেস্টারের জন্য। ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের পড়ুয়া মাইনর বিষয় হিসেবে ল’ স্কুল থেকে সাইবার আইন কিংবা স্কুল অফ জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন থেকে সিনেমা তৈরি নিয়ে পড়াশোনা করতেই পারেন।
ডুয়াল ডিগ্রি বা একত্রে দু’টি ডিগ্রিলাভের পরিকল্পনা থাকলে বিটেক-এর পাশাপাশি দুই সেমেস্টারে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করে বিজনেস ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা অর্জনের সুবিধাও রয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের জন্য আরও রয়েছে বিউটিফুল মাইন্ড প্রোগ্র্যাম। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এ আগ্রহীদের কথা মাথায় রেখে তৈরি বিশ্ব মানের প্রোগ্রামিং ল্যাবে ধাপে ধাপে প্রোগ্রামিং শেখা ও সার্টিফিকেট পাওয়ার সুযোগ থাকছে এই কর্মসূচিতে। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসেই রয়েছে ২০টি ক্লাব। রোবোটিকস, ইন্টারনেট অফ থিংস থেকে নাচ- সব নিয়েই কাজ করে তারা।
পাশাপাশি, পড়ুয়াদের মধ্যে নিজস্ব ব্যবসা শুরুর ইচ্ছে উস্কে দিতে বিটেক কোর্সগুলিতেই রয়েছে বাধ্যতামূলক ভেঞ্চার আইডিয়েশন মডিউল।
নির্দিষ্ট কোর্স চলাকালীন ১০০ শতাংশ ইন্টার্নশিপেরও সুযোগ দেয় এই প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালে বিটেক উত্তীর্ণ হওয়া প্রায় ৮৫ শতাংশ পড়ুয়া ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। তাঁদের উপার্জিত সর্বোচ্চ অঙ্ক বছরে ১০ লক্ষ টাকার প্যাকেজ।
আসন সংখ্যা
বিটেক- ৩৬০টি
বিভাগ- ৬টি
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং