ফাইল চিত্র।
স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বৃদ্ধির দাবিতে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস চত্বর। বিক্ষোভকারীদের দাবি, কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথা ভাল ভাবে না শুনে, পুলিশ ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার করে দিয়েছেন। উপাচার্য অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি পুলিশ ডাকেননি।
এর আগেও একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ওই পড়ুয়ারা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের এই আন্দোলন ‘অকুপাই সিইউ’ নামে চলছে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, করোনাকালে ঘরে বসে পরীক্ষা হচ্ছে। খাতা দেখছে নিজেদের কলেজ। ফল বেরোলে দেখা যাচ্ছে, প্রায় একশো শতাংশ পড়ুয়া পাশ করেছেন এবং প্রচুর নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু স্নাতকোত্তরে তত আসন না থাকায় সকলে ভর্তি হতে পারছেন না।
সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্য আধিকারিকেরা। তখন আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের কাছে আসন বাড়ানোর দাবি জানান। অন্যতম আন্দোলনকারী আশুতোষ মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁদের বক্তব্য ভাল করে না শুনেই উপাচার্য ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যেতে চান। তখন তাঁরা গেটের সামনে বসে পড়েন। এর পরে পুলিশ দিয়ে তাঁদের জোর করে তুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এতে আন্দোলনকারীদের কয়েক জন আহতও হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে পতাকা উত্তোলন করতে গেলে কিছু ছাত্রছাত্রী তাঁকে ঘিরে ধরে আসন বৃদ্ধির দাবি জানান। উপাচার্যের কথায়, ‘‘আমি বলি, এ বিষয়ে এই ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এটি ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের আলোচনার বিষয়। কিন্তু ওঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে সেনেটের বৈঠক ডেকে আসন বাড়াতে হবে। অথচ এটি সেনেটের বিষয়ই নয়।’’ উপাচার্য আরও বলেন, ‘‘এর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্যের সিনিয়র অধ্যাপক এবং ভারপ্রাপ্তদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করি। তাঁরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিকাঠামোয় আসন সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব নয়। আসন বাড়ালে ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি কোথাওই জায়গার সঙ্কুলান হবে না।’’ উপাচার্য জানান, আন্দোলনকারীদের তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরে তিনি বেরিয়ে যান। তার পরে কী ঘটেছে, তা তিনি জানেন না। উপাচার্যের কথায়, ‘‘পুলিশ ডাকার কোনও নির্দেশ আমি দিইনি।’’
পুলিশ সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফেই জানানো হয়েছিল যে, উপাচার্যের গাড়ি আটকানো হচ্ছে। তাই পুলিশ যায়। কিন্তু ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকেনি পুলিশ।
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ঘেরাও গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরই প্রক্রিয়া। তবে উপাচার্যকে প্রথমেই ঘেরাও না করে আগে কথা বলা উচিত। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের ঢোকা অনভিপ্রেত।” ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র কলকাতা জেলা সম্পাদক আবু সাঈদ জানিয়েছেন, সঙ্গত দাবিতে পুলিশি হস্তক্ষেপ তাঁরা মানবেন না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিটির পক্ষে ধ্রুবজিৎ শীলের দাবি, পুলিশ পড়ুয়াদের আক্রমণ করেছে। এই ঘটনাকে তাঁরা ধিক্কার জানাচ্ছেন।