পুতুল নাচ আর পটচিত্রে যক্ষ্মার পাঠ পড়ুয়াদের

পটচিত্র দেখানোর পালা। ওদের বেশির ভাগই যা আগে কখনও দেখেনি। বুধবার এমন ভাবেই ছোটদের এক জায়গায় জড়ো করে প্রোজেক্টরের সাহায্যে পুতুল নাচ এবং পটচিত্র দেখিয়ে যক্ষ্মার সচেতনতায় বার্তা দেওয়া হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৫
Share:

বার্তা: পুতুল নাচ দেখছে পড়ুয়ারা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

তিনতলার ছাদে তখন চলছিল পুতুল নাচ। শীতের সকালে তারিয়ে তারিয়ে তা উপভোগ করছিল কচিকাঁচার দল। ধীরে ধীরে উৎসাহের ভিড়টা আরও ঘন হচ্ছিল। কারণ, এর পরেও ওদের জন্য বাকি ছিল চমক। শুরু হল

Advertisement

পটচিত্র দেখানোর পালা। ওদের বেশির ভাগই যা আগে কখনও দেখেনি। বুধবার এমন ভাবেই ছোটদের এক জায়গায় জড়ো করে প্রোজেক্টরের সাহায্যে পুতুল নাচ এবং পটচিত্র দেখিয়ে যক্ষ্মার সচেতনতায় বার্তা দেওয়া হল।

এ দিন গিরিশ পার্ক এলাকার নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের একটি স্কুলের ছাদে আয়োজন করা হয়েছিল এই সচেতনতার পাঠের। পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়া গ্রামের পটচিত্র শিল্পী স্বর্ণ চিত্রকর সেখানে উপস্থিত থেকে ছোটদের বুঝিয়ে দেন, যক্ষ্মা কী? পটচিত্র, অথচ তাতে পৌরাণিক কাহিনি নয়! যক্ষ্মা রোগের সম্পর্কে রয়েছে নানা তথ্য। এই রোগের লক্ষণ কী কী? সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে এবং কী করা যাবে না, সবটাই পটচিত্র এবং পুতুল নাচের মাধ্যমে দেখানোয় মন দিয়ে শোনে পড়ুয়ারা। এ দিনের অনুষ্ঠানে নিমতলার বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির মামণি দাস বলে, ‘‘আজ বুঝলাম, যক্ষ্মা নিয়ে অনেক কিছু ভুল জানতাম।’’ শোভাবাজারের বাসিন্দা বছর বারোর কৌশিক দাস বলে, ‘‘যক্ষ্মার চিকিৎসা ঠিক সময়ে শুরু হলে তা যে সারে, সেটা আজই শিখলাম।’’ পটচিত্র নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরেছেন স্বর্ণদেবী। বললেন, ‘‘পৌরাণিক গল্প ছাড়াও এখন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে পটচিত্র হচ্ছে। তাই যক্ষ্মা রোগের সচেতনতায় সামাজিক বার্তা দেওয়ার প্রস্তাব আসতেই রাজি হই।’’

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে এক কোটি লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমিত রোগে মৃত্যুর তালিকায় প্রথম দশটির একটি এই যক্ষ্মা। গত বছরেই পৃথিবী জুড়ে এ রোগে মারা গিয়েছেন পনেরো লক্ষ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে তাই তৃণমূল স্তর থেকে সচেতন করার কাজ শুরুর উপরে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতার কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। তেমনই ছিল এ দিনের কর্মশালাটি। উদ্যোক্তা সংস্থার তরফে শ্রেয়সী বসু ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী যক্ষ্মা রোগের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছেন রাজ্য জুড়ে। গ্রাম ও শহরের একাধিক স্কুলে গিয়ে এ ভাবেই প্রচার চালানো হবে।

শ্রেয়সীর কথায়, ‘‘ছোটদের তত্ত্বকথা বা গুরুগম্ভীর আলোচনার মাধ্যমে রোগ নিয়ে বোঝাতে গেলে কেউই মন দিয়ে শুনত না। তাই পটচিত্র ও পুতুল নাচের মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছি।’’ শহরের স্কুলে জায়গা নেই, তাই প্রোজেক্টরের মাধ্যমে পুতুল নাচ দেখিয়ে যক্ষ্মা সম্পর্কে বোঝানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement