প্রতীকী চিত্র।
করোনা কালে পরীক্ষা না-দিয়েই নতুন ক্লাসে উঠে গিয়েছে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা। যে কারণে হাতে কোনও মার্কশিট পায়নি তারা। কিন্তু পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এর ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে অষ্টম থেকে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা। কারণ, বেশ কিছু চাকরির পরীক্ষায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দেখাতে হয়। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত কোনও পড়ুয়া চাইলে তবেই তাকে অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। যদিও শিক্ষার অধিকার আইনে সমস্ত পড়ুয়ারই ওই সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা।
শিক্ষকদের বক্তব্য, গত বছর স্কুলে পরীক্ষা হয়নি বলেই মার্কশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষা না হলে মার্কশিট দেওয়া হবে কিসের ভিত্তিতে? আবার পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, মার্কশিট না-পেলে তারা যে গত বছর স্কুলে পড়াশোনা করেছে, তার কোনও প্রমাণই তো থাকবে না।
এ বারও বছরের প্রথম পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে, এখনও কোনও মূল্যায়ন শুরু হয়নি। অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে কি ফের মূল্যায়ন ছাড়াই নতুন ক্লাসে উঠে যাবে পড়ুয়ারা? সে ক্ষেত্রে তো এ বারও মার্কশিট বা কোনও শংসাপত্র মিলবে না।
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিড-ডে মিলের সঙ্গে যে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এ বার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা বাংলা শিক্ষা পোর্টালে গত বছর যে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হয়েছিল, সেটাই। গত বারও অ্যাক্টিভিটি টাস্ক থেকে কোনও মূল্যায়ন হয়নি পড়ুয়াদের। এ বারও অ্যাক্টিভিটি টাস্ক থেকে মূল্যায়নের কথা শোনা যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, এই ভাবে চললে তো পরপর দু’বছর মূল্যায়ন হবে না পড়ুয়াদের?
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের মতে, “গত বছর যে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হয়েছিল, তাতে প্রশ্নের উত্তরে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ ছিল না। নম্বর দেওয়া হলে ছাত্রছাত্রীরা উত্তরপত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারে আরও যত্নশীল হত। পাশাপাশি, বছরের শেষে তাদের একটা মার্কশিট দেওয়া যেত। এ বার অ্যাক্টিভিটি টাস্কের সঙ্গে মূল্যায়ন হওয়াটা জরুরি।” পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, “শুধু অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দিলেই হবে না, পড়ুয়ারা তা সমাধান করার পরে শিক্ষকদের হাতে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে হবে। অ্যাক্টিভিটি টাস্কে মূল্যায়ন শুরু হলে বছরের শেষে পড়ুয়াদের সামগ্রিক মূল্যায়ন করতে সুবিধা হবে। পড়ুয়ারা মার্কশিটবিহীন থাকবে না।”
যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তার দাবি, “জুন মাসের পরে যখন মিড-ডে মিল দেওয়া হবে, তখন আর পুরনো অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হবে না। সেই নতুন টাস্কের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হবে, না কি নতুন কোনও পদ্ধতি আনা হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।”