যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।
প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তের পর কয়েক জন ছাত্রের শাস্তির সুপারিশ করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তৈরি অভ্যন্তরীণ কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের তেমনটাই দাবি। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ৩৫ জন সরাসরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা যত ক্ষণ ক্লিনচিট পাচ্ছেন না, তত ক্ষণ হস্টেলে থাকতে পারবেন না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে এমনটাই সুপারিশ করা হল। যদিও কমিটির এই রিপোর্ট পাঠানো হবে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি এবং অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের কাছে। তার পরেই সুপারিশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যাদবপুরের মেন হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে গত অগস্ট মাসে মৃত্যু হয় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের। ওই ঘটনায় র্যাগিং এবং খুনের মামলা দায়ের হয়েছিল। পুলিশ এই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। ঘটনার তদন্তে অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটির রিপোর্টেই র্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক জন ছাত্রের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি। ৩৫ জন সরাসরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। ওই ৩৫ জনের হস্টেলে থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে কর্মসমিতির বৈঠকে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনে শুরু হয়েছে এই বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুরের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। সেখানে ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে অনলাইনের ক্লাসের ভাবনার কথাও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ডেঙ্গি পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দুর্গাপুজো পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলতে পারে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে আলোচনার পরে। এই প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট (দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক) পরামর্শ দিয়েছেন যে, পড়ুয়ারা কয়েক দিনের জন্য হস্টেল ছেড়ে দিলে ভাল হয়। কারণ ডেঙ্গি পরিস্থিতি বৃদ্ধি পেলে তা সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই।” সে ক্ষেত্রে পুজো অবধি অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি হাইব্রিড মডেল (অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে)-এ ক্লাস করার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
সোমবার রাতে যাদবপুরের উপাচার্যকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপাল বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন কিংবা অনলাইন-অফলাইন দুই মাধ্যমেই ক্লাস করানোর পরামর্শ দেন। ডেঙ্গি পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্তের প্রেক্ষিতেই এই পরামর্শ বলে রাজভবন সূত্রে খবর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে অনলাইন ক্লাস করানোর মতো পরিকাঠামো এবং পরিস্থিতি রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। মঙ্গলবারই সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ‘অল স্টেকহোল্ডার মিটিং’-এ উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য। এই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত।