যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে অনলাইনে ক্লাসের ভাবনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। মঙ্গলবার জাতীয় কর্মসমিতি (ইসি)-র বৈঠকে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। দুপুর ২টো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনে শুরু হয়েছে এই বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন যাদবপুরের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। যদিও এই অনলাইন ক্লাসের যৌক্তিকতা নিয়ে কোনও কোনও মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনলাইন এবং অফলাইন ক্লাস মিলিয়ে মিশিয়ে করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ডেঙ্গি পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দুর্গাপুজো পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলতে পারে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে আলোচনার পরে।
এই প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট (দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক) পরামর্শ দিয়েছেন যে, পড়ুয়ারা কয়েক দিনের জন্য হস্টেল ছেড়ে দিলে ভাল হয়। কারণ ডেঙ্গি পরিস্থিতি বৃদ্ধি পেলে তা সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই।” সে ক্ষেত্রে পুজো অবধি অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি হাইব্রিড মডেল (অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে)-এ ক্লাস করার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
সোমবার রাতে যাদবপুরের উপাচার্যকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপাল বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন কিংবা অনলাইন-অফলাইন দুই মাধ্যমেই ক্লাস করানোর পরামর্শ দেন। ডেঙ্গি পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্তের প্রেক্ষিতেই এই পরামর্শ বলে রাজভবন সূত্রে খবর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে অনলাইন ক্লাস করানোর মতো পরিকাঠামো এবং পরিস্থিতি রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। মঙ্গলবারই সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ‘অল স্টেকহোল্ডার মিটিং’-এ উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য। এই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত।
কিছু দিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে ক্ষোভপ্রকাশ করেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি জানান, ক্যাম্পাস নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। পরিত্যক্ত পাত্রে জল জমে থাকছে এবং সেখানে মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পুরসভাকে কিছু জানানো হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন অতীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ জন্য লোকবলের অভাবকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি। অনেক জায়গা পরিষ্কার হয়েছে। কিন্তু যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে লোকবল।” উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই যাদবপুরের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া এবং কর্মী ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে এক পড়ুয়ার মৃত্যুও হয়েছে।