—প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিক সিমেস্টার পদ্ধতিতে শুরু করতে নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি হবে। সেই অনুযায়ী পাঠ্য বই প্রকাশের উদ্যোগও শুরু করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে, ওই সমস্ত বই নিয়ম মেনে বাজারে আসতে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন মাস সময় লেগে যাবে বলে জানা যাচ্ছে।
উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্য পুস্তক প্রকাশ করেন, এমন বেশ কয়েক জন প্রকাশক জানিয়েছেন, নতুন পাঠ্যক্রম হাতে পেলে সেই অনুযায়ী প্রথম সিমেস্টারের মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের (এমসিকিউ) বই বাজারে আনতে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন মাস লাগবে। কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার ‘বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভা’র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলছেন, “পাঠ্যক্রম পাওয়ার পরে যাঁরা বইটি লিখবেন, তাঁদের কাছেও এটি নতুন। তাঁদের লেখা অনুমোদনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের রিভিউ কমিটির কাছে যাবে। রিভিউ হওয়ার পরে সংশোধন হবে। এর পরে ফের আমরা রিভিউয়ের জন্য পাঠাব। সব ঠিক হলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ আমাদের টিবি নম্বর (টেক্সট বই নম্বর) দেবে। তার পরেই শুরু হবে বই ছাপা। গোটা প্রক্রিয়ায় তিন থেকে সাড়ে তিন মাস তো লাগবেই।’’
বিশ্বজিৎ জানান, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে তাঁরা চিঠি দিয়েও জানিয়েছেন যে, তাড়াহুড়ো করে বই ছাপাতে গেলে চরম অব্যবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। বরং এটি ২০২৫ সাল থেকে শুরু হোক।
একই কথা বলছেন ‘কলকাতা পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি শিশিরবিন্দু চৌধুরী। তিনিও বলেন, ‘‘তাড়াহুড়ো করে বই প্রকাশ না করার পরামর্শ আমরা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, নতুন পাঠ্যক্রম ২০২৫ সাল থেকে চালু হলে সকলেই সময় পাবে।’’ পাঠ্য বইয়ের কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার শুভজিৎ সাঁতরা, দেবাঞ্জন মণ্ডল ও সুদর্শন নিয়োগীরা জানাচ্ছেন, বই যাতে নির্ভুল হয়, তার জন্য ছাপানোর সময়ে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। ফলে তাড়াহুড়ো সম্ভব নয়। তিন মাসে নতুন বই বাজারে আনার কাজটা বেশ কঠিন।
প্রশ্ন উঠেছে, নতুন বই বাজারে আসতে যদি তিন থেকে সাড়ে তিন মাস লাগে, তা হলে যারা একাদশে ভর্তি হবে, তারা এই তিন মাস কী পড়বে? তাদের তো নতুন পাঠ্যক্রমের বইয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে! শুভজিতের মতে, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অনুমোদিত পাঠ্যক্রমের বই তারা পাবে না ঠিকই, কিন্তু বাজারে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের উপরে বেশ কিছু বই আছে, যেগুলি তাদের কাজে আসতে পারে।’’
অন্য দিকে, স্কুলশিক্ষকেরাও মনে করছেন যে, নতুন পাঠ্যক্রম শুরু করতে গেলে তাঁদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। অথচ, কী ভাবে পড়াতে হবে, তার কোনও নির্দেশিকা এখনও তাঁদের দেওয়া হয়নি।“
সংসদ সূত্রের খবর, বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যক্রমে বেশ কিছু পরিবর্তন হবে। বিজ্ঞানে বদল হবে সামান্য। বাণিজ্যের পাঠ্যক্রমে বদল আসবে সাম্প্রতিক পরিবর্তনকে মান্যতা দিয়ে। ইতিহাসে কিছু আধুনিকীকরণ করা হবে। বিভিন্ন মহলের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তার আশ্বাস, “নতুন পাঠ্যক্রম এবং সিমেস্টার নিয়ে যা পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে সব কাজ সুষ্ঠু ভাবেই হবে।’’