প্রতীকী চিত্র।
পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে দশ দিনের বেশি হয়ে গেল। কিন্তু মার্কশিট হাতে পাননি ওঁরা। ফলে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন সিআইএসসিই বোর্ডের আইএসসি, অর্থাৎ দ্বাদশ পাশ পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, মার্কশিট হাতে না পাওয়ায় অনলাইনে কলেজে ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। গত সোমবার থেকে কলেজগুলি অনলাইনে ভর্তির আবেদন নিতে শুরু করেছে।
যদিও ওই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলের অধ্যক্ষদের আশ্বাস, শীঘ্রই মার্কশিট স্কুলে পাঠানো হবে। মার্কশিটগুলি দিল্লি থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে পাঠানো হয়। সেই কাজ শুরু হবে দিন দুয়েকের মধ্যে। অধ্যক্ষদের দাবি, তাঁরা আশা করছেন, চলতি সপ্তাহের শেষে পরীক্ষার্থীরা স্কুলে গিয়ে মার্কশিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
তবুও আশঙ্কা যাচ্ছে না দ্বাদশ পাশ পড়ুয়াদের। তাঁদের বক্তব্য, এখন যে ফলাফল হাতে এসেছে, সেখানে মোট নম্বর বাদেও কোন বিষয়ে কত নম্বর তাঁরা পেয়েছেন, তা লেখা আছে। কিন্তু নম্বরের বিভাজন করা নেই। যেমন, বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে থিয়োরি এবং প্র্যাক্টিক্যালের নম্বর আলাদা করে দেওয়া থাকে। বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিষয়গুলিতে থাকে থিয়োরি ও প্রজেক্টের নম্বর। মার্কশিটে নম্বরের এই বিভাজন দেখানো থাকে।
পছন্দের আটটি কলেজে ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে ঠিক মতো ফর্মটাই পূরণ করতে পারেননি বেলুড়ের খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা তৃধা প্রামাণিক। তৃধা বলেন, “যখন ফর্ম পূরণ করতে যাচ্ছি, তখন সব কলেজ থিয়োরি এবং প্র্যাক্টিক্যাল বা প্রজেক্টের নম্বর আলাদা করে জানতে চাইছে। মার্কশিট না পাওয়ায় বিষয়ের নম্বর বিভাজন কী হল, তা তো জানতে পারছি না। ফলে আলাদা করে নম্বর ফর্মে লিখতে পারছি না।” এখানেই তৃধাদের প্রশ্ন, যে ভাবে কলেজ ফর্ম পূরণ করতে বলেছে, সে ভাবে করতে না পারায় তা বাতিল হয়ে যাবে না তো? একই কথা বলছেন দ্বাদশ উত্তীর্ণ ঐশিক ভট্টাচার্য। তিনি জানাচ্ছেন, এমনিতেই এ বার পাশের হার খুব ভাল। ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। ফলে প্রতিযোগিতাও তীব্র হবে। ঐশিকের প্রশ্ন, ‘‘এই অবস্থায় ভর্তির আবেদন যে ভাবে করতে বলা হয়েছে, সে ভাবে না করায় তা যদি বাতিল হয়, তার দায় কে নেবে?’’
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, ভর্তি হতে গেলে এক জন পড়ুয়াকে বিস্তারিত নম্বর জানাতেই হবে। না হলে কিসের ভিত্তিতে তাঁকে ভর্তি করা হবে? করোনার জন্য পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে অনলাইনে। তাই অনলাইনেই ফর্মে বিস্তারিত সব তথ্য জানাতে হবে।
এক অভিভাবক কৌশিক বসুর প্রশ্ন, পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে প্রায় দু’সপ্তাহ হতে চলল। কিন্তু এখনও কেন পুরো মার্কশিট হাতে পেল না ওরা? তাঁর মতে, “এটা ঠিক যে ভর্তির প্রক্রিয়া চলবে আরও কয়েক দিন। কিন্তু প্রতিযোগিতার আবহে অনেকেই তাড়াতাড়ি ফর্ম পূরণ করতে চাইছে।” আর এক অভিভাবক কিংশুক মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের পড়ুয়ারা মার্কশিট পেয়ে গিয়েছে। তারা পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে পারছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকবে?’’
এই সমস্যা প্রসঙ্গে সিআইএসসিই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও কোনও উত্তর দেননি।