সভায় কৃতী ও আসিফ। বৃহস্পতিবার, কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
‘‘আমার বাবার কোনও পাকা চাকরি নেই। জেএনইউয়ে ফি খুব কম। তাই পড়াশোনা চালাতে পারছি। ফি বাড়লে আর পারব না।’’
বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিট মোড়ে দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের ডাকা এক সভায় যোগ দিয়ে এমনই জানালেন কৃতী ভগত। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লেবার স্টাডিজ়ের ছাত্রী কৃতী। গত ১৮ নভেম্বর হস্টেলের ফি বৃদ্ধি
নিয়ে জেএনইউ পড়ুয়াদের সংসদ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ওই অভিযান থামাতে হঠাৎই রাস্তার দু’ধারের আলো নিভিয়ে প্রতিবাদীদের ভিড়ের উপরে পুলিশের ঝাঁপিয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল। আহত হয়েছিলেন কৃতীও। ব্যারাকপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রী এ দিন বলেন, ‘‘জেএনইউয়ে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই আসেন গরিব পরিবার থেকে। ফি বাড়লে আমার মতো অনেকেই আর পড়া চালাতে পারবেন না।’’
‘ডেমোক্র্যাটিক রিসার্চ স্কলার্স অর্গানাইজেশন’-এর (ডিআরএসও) ডাকা এ দিনের প্রতিবাদ-সভা ছিল নতুন নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং শিক্ষা জগতের উপরে আঘাতের বিরুদ্ধে। কৃতীর সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগের ছাত্র মহম্মদ আসিফ। নয়া নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি-র বিরুদ্ধে জামিয়ার পড়ুয়াদের আন্দোলনে সক্রিয় তিনি। প্রতিবাদ সভায় আসিফ জানিয়ে গেলেন, যতই পুলিশ চড়াও হোক, আন্দোলন তাঁরা চালিয়ে যাবেন।
সভায় যোগ দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বোস ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট-সহ দেশের বেশ কিছু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও গবেষকেরা। বক্তাদের অনেকেই জেএনইউয়ের পড়ুয়া-শিক্ষকদের উপরে মুখ বেঁধে আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেন। বেঙ্গালুরুর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিয়োরিটিক্যাল সায়েন্সেস-এর গবেষক অর্ঘ্য দাস ডিআরএসও-র আহ্বায়ক।
অর্ঘ্য এ দিন বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করলে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের পেটাচ্ছে! ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করলেও একই কাজ করছে। অথচ মুখ ঢাকা বহিরাগতেরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে ঢুকে মারলে পুলিশ না-দেখার ভান করছে। ছাত্র-গবেষকেরা এ সব মানবেন না। প্রতিবাদ চলবে।’’