যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা আটকে টেবিল টেনিস, ক্যারম ও দাবা খেলতে ব্যস্ত ধর্মঘট সমর্থনকারীরা।নিজস্ব চিত্র।
চিত্র-১: ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় বেসরকারি বাসের কার্যত দেখা নেই। ভরসা বলতে মাঝেমধ্যে দেখা পাওয়া ভিড়ে ঠাসা সরকারি বাস।
চিত্র-২: রাস্তার উপরে জ্বলছে টায়ার। বাস দেখলেই দৌড়ে গিয়ে আটকানোর চেষ্টা করছেন লোকজন। রাস্তায় চলছে ক্যারম খেলা।
চিত্র-৩: কাকভোরে বিমানবন্দরে হাজির যাত্রীরা।
বাম ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বৃহস্পতিবারের সাধারণ ধর্মঘটের দিনে এমনই নানা ছবি দেখা গেল শহরে।
এ দিন গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন বহু মানুষ। অভিযোগ, এমনিতেই রাস্তায় বেসরকারি বাস ছিল কম। প্রচণ্ড ভিড় ছিল সরকারি বাসে। সংক্রমণের আশঙ্কায় অনেকে বাধ্য হয়েছেন সেই বাস ছাড়তে। উল্টোডাঙা মোড়ে দেখা গিয়েছে যাত্রীদেরর ভিড়। অথচ পর্যাপ্ত বাস নেই। ফলে জরুরি
প্রয়োজনে রাস্তায় বার হওয়া লোকজনকে এ দিন এ রকম অনেক জায়গাতেই চরম হেনস্থার মধ্যে পড়তে দেখা যায়। অবশ্য মোটরবাইক কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে চেপেও রাস্তায় বেরিয়েছিলেন অনেকে।
বাসের বদলে অবশ্য মেট্রোয় এ দিন অনেকে যাতায়াত করেছেন। চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনে ঢুকতে গিয়ে যাত্রীদের কেউ কেউ ধর্মঘটীদের বাধার মুখে পড়েন। চাঁদনি চক, সেন্ট্রাল, দমদম মেট্রো স্টেশন জোর করে বন্ধ করার চেষ্টাও হয়।
অনেক জায়গাতেই এ দিন ধর্মঘটীরা জনজীবন স্তব্ধ করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। মল্লিকবাজার এবং রাজাবাজারে দেখা যায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা আটকানো হচ্ছে। লেনিন সরণিতে বাস, ট্রাম আটকানোরও চেষ্টা করা হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের সামনে ছাত্রদের রাস্তার উপরে ক্যারম, টেবিল টেনিস, দাবা খেলতে দেখা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্মঘটে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ১৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লেনিন সরণিতে দু’টি দোকানে ভাঙচুরের চেষ্টার ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের ১ নম্বর গেটের বাসস্টপে বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানো যাত্রীরা বলেন, ‘‘অধিকাংশ বাসে ভিড়। সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই উঠছেন না।’’ দক্ষিণে গড়িয়াহাটে জ়েব্রা ক্রসিংয়ের উপরে চক দিয়ে লিখে ধর্মঘট সফলের আবেদন করা হয়।
তবে কোথাও কোথাও আবার রাস্তাঘাট ছিল বেশ ফাঁকা। দক্ষিণের বিজন সেতু এলাকাও বেশ ফাঁকা ছিল। বিধাননগর, নিউ টাউনে বাস, অটো চললেও রাস্তায় লোকজন তেমন দেখা যায়নি। তবে শিল্প তালুকের কাজকর্ম স্বাভাবিক ছিল বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের।
নিউ টাউনে এ দিন জোর করে দোকান বন্ধ করা, দোকান ভাঙচুরের চেষ্টারও অভিযোগ ওঠে। নারকেলবাগানের কাছে গৌরাঙ্গনগরে রাস্তা আটকাতে টায়ার জ্বালানো হয়।
অন্য দিকে হাওড়ার ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বালি
বাদামতলা, বালিহল্ট, বালিখালে চলে রাস্তা অবরোধ। যানজটে আটকে পড়ে কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্সও। পুলিশ জানায়, হাওড়া স্টেশনে ট্যাক্সি কম থাকায় যাত্রীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়। হাওড়া, দক্ষিণ শহরতলি-সহ কোনও কোনও জায়গায় রেল লাইনে অবরোধ হলেও লোকাল ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল বলেই পূর্ব রেলের দাবি।
এ দিন অবশ্য কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। বিমানযাত্রীরা কলকাতায় নেমে বিমানবন্দর থেকে ভলভো বাস, পর্যাপ্ত হলুদ ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব পেয়েছেন।