ফাইল চিত্র
শহর জুড়ে পুরসভার নিজস্ব যত বাতিস্তম্ভ রয়েছে, তা এ বার পুর সম্পত্তির তালিকায় নথিভুক্ত হতে চলেছে। কলকাতা পুর প্রশাসন সূত্রের এমনই খবর।
ওই বাতিস্তম্ভগুলি অন্য যে সংস্থাই দেখভাল করুক না কেন, এখন থেকে পুরসভার আলো ও বিদ্যুৎ দফতরই সেগুলির দেখভাল করবে বলে ঠিক হয়েছে। সেই সঙ্গে বাতিস্তম্ভগুলির কী অবস্থা, সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কারণ শহরের বহু জায়গাতেই বাতিস্তম্ভের অবস্থা খারাপ বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু পুর-সম্পত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে বাতিস্তম্ভের হাল সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকবে। তাই পুর কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন অনেকে।
তবে রাজ্য পূর্ত দফতর, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ), হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স অফিস ও সিইএসসি-র বাতিস্তম্ভ নিয়ে পুরসভা কোনও রকম মাথা ঘামাবে না। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘ওই চারটি সংস্থা বাদ দিয়ে পুরসভার যত ছোট-বড়, হেরিটেজ, উচ্চ বাতিস্তম্ভ-সহ অন্যান্য বাতিস্তম্ভ রয়েছে, তার সব ক’টি রই দেখভাল পুরসভা করবে। গত মাসে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তথ্য বলছে, শহরে পুরসভার বাতিস্তম্ভের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছরেই একবালপুরে বাতিস্তম্ভের একাংশ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ বছরের এক শিশুর। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, পুরসভার দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কারণ, মরচে ধরা ওই দুর্বল বাতিস্তম্ভের উপরে রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। যাতে তা নতুনের মতো দেখায়। কিন্তু এলাকার বাতিস্তম্ভগুলির হাল দেখলেই বোঝা যায়, বেশ কয়েকটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। অবশ্য শুধু একবালপুরেই নয়, শহরের অনেক জায়গাতেই বাতিস্তম্ভের এমন দশা বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনার পরেই কলকাতার সব বাতিস্তম্ভ পরীক্ষা করার জন্য পুরকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম। কোন ওয়ার্ডে পুরসভার কতগুলি বাতিস্তম্ভ রয়েছে, কোনটার হাল খারাপ— সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছিলেন তিনি। সেই মতো পুরসভার তরফে তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু হয়।
কিন্তু তার পরেও দেখা গিয়েছে, অনেক বাতিস্তম্ভের দেখভাল করছে অন্য একাধিক সংস্থা। ফলে কোন বাতিস্তম্ভের দায়িত্ব কোন সংস্থার, তা নিয়ে একটা বিভ্রান্তি থাকছে। সে কারণে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও ফাঁক থেকে যাচ্ছে। এ দিকে বর্ষার সময়ে ভারী বৃষ্টি হলে দুর্বল বাতিস্তম্ভগুলি ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। সেই বিপদ এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন পুরকর্তারা।