নির্মীয়মাণ: কাজ শুরু হল তেঘরিয়া আন্ডারপাসের। নিজস্ব চিত্র
ভিআইপি রোডের যান চলাচল মসৃণ করতে এ বার শুরু হল তেঘরিয়া আন্ডারপাসের কাজ। দিন কয়েক আগে ভিআইপি রোডের শ্রীভূমি ও গোলাঘাটা আন্ডারপাসের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা কৈখালি আন্ডারপাসের কাজ। পূর্ত দফতরের বাগুইআটি হাইওয়ে সাব ডিভিশনের আধিকারিকেরা জানান, এক বছরের মধ্যেই ভিআইপি রোডে চালু হয়ে যাবে ওই নতুন চারটি আন্ডারপাস।
উল্টোডাঙার দিক থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ভিআইপি রোডে প্রথম আন্ডারপাস তৈরি হয়েছিল কেষ্টপুর, বাগুইআটি ও জোড়ামন্দিরে। ওই তিনটি আন্ডারপাস তৈরির সুফল মিলেছিল হাতেনাতে। বছর কয়েক আগেও কেষ্টপুর-বাগুইআটিতে দীর্ঘ যানজট হত। কিন্তু ওই তিনটি আন্ডারপাস তৈরির পরে সেই যানজট কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। ভিআইপি রোড ধরে কাজের সূত্রে নিয়মিত উড়ান ধরতে যান কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা অলক দে। তিনি বলেন, ‘‘ভিআইপি রোডে বাগুইআটি উড়ালপুল হওয়ার আগেই আন্ডারপাস তিনটে খুলে যায়।
তার ফলে কেষ্টপুর আর বাগুইআটির যানজট এতটাই কমে গিয়েছিল যে, আমাদের মনে হয়েছিল, উড়ালপুলের আর কী দরকার? সমস্যার সমাধান তো অনেকটাই হয়ে গিয়েছে।’’
তবে কেষ্টপুর ও বাগুইআটির আন্ডারপাস তৈরি হওয়ার পরেও অবশ্য গোটা ভিআইপি রোডে যানজট পুরোপুরি কমেনি। দেখা যায়, বাগুইআটির উড়ালপুল থেকে নেমে যানবাহন আটকে যাচ্ছে তেঘরিয়া মোড়ে। কিছু গাড়ি আবার নিউ টাউন দিয়ে এসে আটকে যাচ্ছে কৈখালিতে। নিত্যযাত্রীরা জানান, দুই রুটের গাড়ি একসঙ্গে তেঘরিয়া ও কৈখালি পর্যন্ত চলে আসায় সেখানে তীব্র যানজট হচ্ছে। কয়েক কিলোমিটার লম্বা গাড়ির জট চলে যাচ্ছে এক নম্বর গেটের মোড় পর্যন্ত। এই যানজটে ফেঁসে বিমান ধরতে না পারার ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের দাবি, তেঘরিয়া ও কৈখালিতে আন্ডারপাস তৈরি হয়ে গেলে ওই এলাকায় যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
তেঘরিয়ায় আন্ডারপাসের কাজ শুরু হলেও কৈখালিতে কাজ শুরু হয়নি। কৈখালি মোড়ে রাস্তার নীচে টেলিফোন থেকে শুরু করে নানা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কেব্ল থাকায়, তা নিয়ে চিন্তায় ইঞ্জিনিয়ারেরা। আন্ডারপাস তৈরির সময়ে ওই সব তার বাঁচিয়ে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে রাস্তা ঘিরে আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হলে ভিআইপি রোডের কৈখালি মোড়ে যে যানজট তৈরি হবে, তা কী ভাবে সামলানো যাবে, তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশ। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। ওই দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘পুলিশের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে গেলেই আমরা কৈখালিতে আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু করব।’’
পূর্ত দফতরের বারাসত হাইওয়ে ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কনকেন্দু সিংহ বলেন, ‘‘শুধু তেঘরিয়াই নয়, আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে গোলাঘাটা ও শ্রীভূমিতেও। গোলাঘাটা ও শ্রীভূমি আন্ডারপাস তৈরি হয়ে গেলে এখনকার লেকটাউনের যানজটও
আর থাকবে না।’’ ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, প্রতিটি আন্ডারপাস তৈরি করতে খরচ পড়ছে চার কোটি টাকা। ভিআইপি রোডের ট্র্যাফিক চলাচল ঠিক রেখে এই আন্ডারপাসগুলি তৈরি করতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগার কথা।
তবে সব ক’টি আন্ডারপাস তৈরি হয়ে গেলেও বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট মোড়ের যানজট কিন্তু মিটছে না। নিত্যযাত্রীদের আশঙ্কা, ভিআইপি রোড ও যশোহর রোড মোড়ের যানজট তখন আরও তীব্র হবে। তবে সেই সমস্যা সমাধানের কথাও ভেবে রেখেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কৈখালি থেকে একটি উড়ালপুল তৈরি হবে, যা বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেটে গিয়ে নামবে। তখন পুরোপুরি বাধাহীন হয়ে যাবে ভিআইপি রোড।’’