রাজ্যের পরিবেশনমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। —ফাইল চিত্র।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপনের ডিসপ্লে বোর্ড, ব্যানার-সহ মঞ্চের কোথাও কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নেই? কেন তাঁর কোনও ছবি রাখা হয়নি? এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের পরিবেশনমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। কেন এমন ঘটনা ঘটেছে, মঞ্চে দাঁড়িয়েই রাজ্য পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব রোশনী সেনের কাছ থেকে সে ব্যাপারে রিপোর্ট চাইলেন তিনি। কার্যত নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটেছে সোমবার, নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত পরিবেশ দিবস পালনের অনুষ্ঠানে।
নিজের বক্তব্য রাখতে উঠে এ দিন পরিবেশমন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী এই সরকারের প্রধান হওয়া সত্ত্বেও মঞ্চে তাঁর কোনও ছবি বা বার্তা ব্যবহার না করার ঘটনায় তিনি রীতিমতো বিস্মিত। এ ব্যাপারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরিবেশমন্ত্রীর এমন প্রশ্নে স্বভাবতই হতচকিত হয়ে পড়েন মঞ্চে উপস্থিত পর্ষদের কর্তা-সহ অন্য আমন্ত্রিতরা।
বক্তৃতার একটি পর্বে এসে হঠাৎই মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে মঞ্চের উপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বা বার্তা অবশ্যই রাখা উচিত ছিল। কিন্তু কেন তা করা হয়নি, সে ব্যাপারে রোশনী সেনকে আমি রিপোর্ট জমা দিতে বলছি। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই দফতরের যাবতীয় কাজকর্ম হয়। তাই এখানে তাঁর কোনও ছবি না থাকায় আমি খুবই বিস্মিত।’’
বক্তৃতা শেষে যখন পরিবেশমন্ত্রী নিজের আসনে বসতে যাচ্ছেন, তখন কার্যতই ‘অপ্রস্তুত’ পর্ষদের কর্তারা কিছু একটা বলতে যান তাঁকে। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি মানস। উল্টে নিজের বক্তব্যে অনড় থাকেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, এর পর থেকে দফতরের বা পর্ষদের সমস্ত অনুষ্ঠানে যেন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি অবশ্যই থাকে।
এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের অভ্যন্তরে দ্বিমত তৈরি হয়েছে। এক পক্ষের বক্তব্য, অনুষ্ঠানের ব্যানারে, এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড-সহ বিভিন্ন জায়গায় চলতি বছরের পরিবেশ দিবসের থিম, প্লাস্টিক-দূষণের মাত্রা কমানোকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই হয়তো মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়নি। অপর পক্ষের অবশ্য মত, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান। তাই সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁর ছবি ব্যবহার নিয়ম-রীতির মধ্যেই পড়ে। যা এ দিনের অনুষ্ঠানে করা হয়নি।
তবে যা-ই হোক না কেন, এই ঘটনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপনকে একটা আলাদা ‘মাত্রা’ দিয়েছে। এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য দূষণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র-সহ পর্ষদের কর্তারা, পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র পর্ষদের চেয়ারম্যান হিমাদ্রিশেখরদেবনাথ, ‘ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ডওয়েটল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’-এর ডিরেক্টর নীলম মিনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।