—ফাইল চিত্র।
কোন এলাকায় কত লুট, চুরি, মহিলাঘটিত অপরাধ, ডাকাতি কিংবা খুনের ঘটনা ঘটছে এখন থেকে তা জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। নির্দিষ্ট সময়ে যদি ভোট হয়-ও, তা হলে আর বাকি চার মাস। সেই সময়সীমার আগেই শহরের কোথায়, কী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তা জানতে চায় নির্বাচন কমিশন। দিন কয়েক আগেই কমিশনের তরফে গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের দিন কী কী গোলমাল হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ বার আরও এক কদম এগিয়ে এলাকার আইনশৃঙ্খলার খতিয়ান সরাসরি নিজেদের হেফাজতে রাখতে চাইছে কমিশন।
সেই সঙ্গে আইনত অপরাধীদের বর্তমান অবস্থা কী বা গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে এমন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা কলকাতা পুলিশ এলাকার সব থানার থেকে লালবাজারের মাধ্যমে জানতে চাইল নির্বাচন কমিশন।
শনিবার এই মর্মে কলকাতা পুলিশের সব থানার কাছে ইমেল পাঠানো হয়েছে। ২১ পাতার নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে মেল করে জানাতে বলা হয়েছে।
আজ, সোমবারের মধ্যেই প্রথম রিপোর্ট থানাগুলিকে জানাতে হবে। লালবাজার জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সাত দিনে শহরের কোথায় লুট, চুরি, অস্ত্র আইনে অপরাধ, মহিলাঘটিত অপরাধ, ডাকাতি কিংবা খুনের মতো ঘটনা ঘটেছে তা জানাতে বলা হয়েছে প্রথম রিপোর্টে। প্রতি সাত দিন অন্তর ওই রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, এর সঙ্গে প্রতিটি থানায় জামিন অযোগ্য ধারায় কতগুলি মামলা রয়েছে এবং সেই মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, কোনও নেতা বা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকলে পুলিশ সেই মামলায় কী ব্যবস্থা নিয়েছে সবই জানাতে হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে এমন পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, নির্বাচন কমিশন তা জানতে চাইছে। অর্থাৎ, কোনও পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নিয়মমাফিক সম্পত্তি অধিগ্রহণের মতো নির্দেশ মানা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ভোটের কাজে যুক্ত পুলিশের একটি অংশের মতে, প্রতি বার ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের তরফে অপরাধের বিস্তারিত হিসেব চাওয়া হয়। কিন্তু এ বার ভোটের উত্তাপ তৈরির অনেক আগেই কোন এলাকায় কী ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তার হিসেব নিয়ে রাখছে কমিশন। ফলে সামান্য গোলমালের মামলা থানায় রুজু হলেও তা কমিশনের নখদর্পণে থাকবে। যা দেখে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অপরাধের মামলা রুজুর মধ্যেই বোঝা যায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন। কমিশন পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব নেওয়ার আগে সেই পরিস্থিতি বুঝে নিতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সন্তুষ্ট না হলে কঠোর সিদ্ধান্তও নিতে পারে তারা।”