বেহালায় শুরু নিকাশির উন্নয়ন

ফি-বছরের জলযন্ত্রণা থেকে বাসিন্দাদের মুক্তি দিতে বেহালার একাংশে শুরু হল নিকাশি উন্নয়নের কাজ। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি), রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুরসভার মিলিত ভাবে এই প্রকল্পের ব্যয় বহন করছে। ১২০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করছে কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইম্প্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (কেইআইআইপি)।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share:

শুরু হয়েছে কাজ। নিজস্ব চিত্র।

ফি-বছরের জলযন্ত্রণা থেকে বাসিন্দাদের মুক্তি দিতে বেহালার একাংশে শুরু হল নিকাশি উন্নয়নের কাজ। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি), রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুরসভার মিলিত ভাবে এই প্রকল্পের ব্যয় বহন করছে। ১২০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করছে কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইম্প্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (কেইআইআইপি)।

Advertisement

এই প্রকল্পে কলকাতা পুরসভার ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবর্ণপাড়ার অন্তর্গত কে কে রায়চৌধুরী রোড, জগৎ রায়চৌধুরী রোড, কালীকিঙ্কর রায়চৌধুরী রোড এবং ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নারায়ণ রায় রোড, উদয়ন পল্লি, ভট্টাচার্য পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, শশীভূষণ ব্যানার্জি রোড, অমৃতলাল মুখার্জি রোড, রজনী ব্যানার্জি রোডে পাইপ লাইন পাতা শুরু হবে। সেই সঙ্গে ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালমিশ্র রোড, মহেন্দ্র ব্যানার্জি রোড, জয়রামপুর জলা রোড, আদর্শ নগর পূর্ব, আদর্শ নগর পশ্চিম, নবপল্লি, শ্যামসুন্দর সংলগ্ন এলাকার ১৪-১৫ কিলোমিটার রাস্তায় পাইপ লাইন বসবে। জোকা ট্রাম ডিপো এবং বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের জমিতে যথাক্রমে চড়িয়াল ও বেগর খালের কাছে দু’টি পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দেড় দশকে জনবসতি বাড়লেও এই সব এলাকায় নিকাশির কোনও উন্নতি হয়নি। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে যায়। জল সরতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে। ফলে কালো, দুর্গন্ধময় জল মাড়িয়েই কিছু দিন যাতায়াত করতে হয়। কোনও কোনও এলাকায় বাড়ির ভিতরেও

Advertisement

ঢুকে যায় জল। তিন-চার দিনেও তা নামে না। তখন খাটের উপরেই হয় রান্না-খাওয়া-ঘুম।

১৪ নম্বর বরোর অধীন এই এলাকা। বরো চেয়ারম্যান তৃণমূলের মানিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশির জল চড়িয়াল খাল, বেগর খাল, নিউ মণি খাল, মণি খাল, অবলুপ্ত মণি খাল, পর্ণশ্রী খালে পড়ার কথা। কিন্তু সাড়ে তিন দশকে সে ভাবে পলি তোলার কাজ না হওয়ায় প্রায় বুজে গিয়েছিল খালগুলি। গত বছর রাজ্য সেচ দফতর কিছু অংশের পলি তুলেছে। সম্প্রতি নিকাশি এবং বর্ষার জল খালে ফেলার কাজও শুরু করেছে কেইআইআইপি। তবে কাজ শেষ হতে তিন বছর লাগবে।”

কেইআইআইপি সূত্রে খবর, শহরের নিকাশির উন্নতিতে ধাপে ধাপে কাজ শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। তখন বেহালার ১২৯, ১৩০ এবং ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে পাইপলাইন পাতার কাজ হলেও জমি সংক্রান্ত জটিলতায় প্রকল্প শেষ হয়নি। ফলে কাজ হলেও জলযন্ত্রণা থেকে নিস্তার মেলেনি এলাকার বাসিন্দাদের। এডিবি ট্রান্চ-১ এর জন্য ঋণ মঞ্জুর করায় ১২৫ এবং ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশির কাজ শুরু হচ্ছে। পাশাপাশি জমি জট কাটিয়ে অসমাপ্ত প্রকল্পটির কাজও শুরু হচ্ছে। এই প্রকল্পে ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে।

কেইআইআইপির এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ১২৫ ও ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পাইপ লাইনের কাজ হবে। সেই লাইন জুড়বে ডায়মন্ড হারবার রোডে বেহালা চৌরাস্তায়। সেখান থেকে ১৬০০-২৪০০ ডায়ামিটার মাপের পাইপে নিকাশির জল আসবে চড়িয়াল খালের মুখে জোকা ট্রাম ডিপোর পাম্পিং স্টেশনে। বর্ষা এবং শুকনো আবহাওয়ার জন্য দু’টি পৃথক পাম্প থাকবে। বর্ষার সময়ে একটির মাধ্যমে স্টর্ম ওয়াটার পড়বে খালে। অন্য সময়ে নিকাশির জল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট হয়ে পড়বে চড়িয়ালে। ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বেগর খালের জন্য একটি পাম্পিং স্টেশন হচ্ছে। সেখান থেকে জল যাবে বেহালা ফ্লাইং ক্লাব পাম্পিং স্টেশন হয়ে জিনজিরা বাজার পাম্পিং স্টেশনে। এর পর গার্ডেনরিচ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট হয়ে পড়বে মণি খালে। কাজ শেষে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলির পাশাপাশি উপকৃত হবেন ১৫ নম্বর বরো এবং মহেশতলা পুরসভার এক অংশের বাসিন্দারাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement