SSKM

পিজিতে পা বাঁচিয়েই ক্যানসারের অস্ত্রোপচার কিশোরের

বাঁকুড়ার নবম শ্রেণির ওই ছাত্রের এক বছর ধরে গোড়ালির উপরে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অংশটি ফুলতে শুরু করে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে গিয়েও উপকার হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

পায়ের যন্ত্রণায় হাঁটাচলা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল ১৪ বছরের এক কিশোরের। ক্রমশ ফুলছিল বাঁ পায়ের গোড়ালির কিছুটা উপরের অংশ। পরীক্ষায় ধরা পড়ল, ভিতরে রয়েছে টিউমার। সেই ক্যানসার ছড়িয়েছে পায়ের হাড়ে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে রক্তবাহী নালিও। শেষে অস্ত্রোপচার করে কিশোরের পা বাদ দেওয়া থেকে বাঁচাল এসএসকেএম। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিয়ে সেখানে প্রতিস্থাপন করা হল নতুন হাড় ও রক্তবাহী নালি।

Advertisement

বুধবার প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে অস্থি, অস্থি-ক্যানসার ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের দল ওই অস্ত্রোপচার করেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার নবম শ্রেণির ওই ছাত্রের এক বছর ধরে গোড়ালির উপরে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অংশটি ফুলতে শুরু করে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে গিয়েও উপকার হয়নি। শেষে পিজিতে এলে অস্থি বিভাগে ভর্তি করার পরে পরীক্ষা করিয়ে দেখা যায়, টিবিয়া (হাঁটুর নীচ থেকে গোড়ালি পর্যন্ত সব চেয়ে বড় ও শক্ত হাড়) এবং ফিবুলায় (টিবিয়ার পাশে থাকা আর একটি সরু হাড়) ক্যানসার ছড়িয়েছে। এমআরআই-তে বোঝা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রক্তবাহী নালিও। পিজি-র অস্থি রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মুকুল ভট্টাচার্য বলেন, “এ ক্ষেত্রে পা বাদ দেওয়াই একমাত্র পথ। তাই পা বাঁচিয়ে সমস্যা দূর করা মারাত্মক চ্যালেঞ্জের ছিল। কিন্তু মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে ওই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”

সেই মতো মুকুল ও ওই কিশোরের চিকিৎসক তন্ময় দত্ত, অস্থি-ক্যানসার শল্য চিকিৎসক কৌশিক নন্দী, শশাঙ্ক সিংহ, প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক নীলাঞ্জনা পাল, কল্যাণ দাস, সুশোভন লাহা, দীপঙ্কর রায় এবং অ্যানাস্থেটিস্ট ধ্রুব ভৌমিকেরা মিলে অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসকেরা জানান, টিউমারটি বাদ দেওয়ার পাশাপাশি টিবিয়া ও ফিবুলার ২২ সেন্টিমিটার করে কেটে বাদ দেওয়া হয়। বাদ যায় রক্তবাহী নালিও। এর পরে অন্য পা থেকে হাড় কেটে টিবিয়ার অংশে প্রতিস্থাপন করা হয়। সঙ্গে জোড়া হয় রক্তবাহী নালিকেও। যাতে ভবিষ্যতে টিবিয়া মোটা হতে পারে। এর পরে ফিবুলার অংশে হাড় প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি রক্তবাহী নালিগুলিকে ‘অ্যানাস্টোমোসিস’, অর্থাৎ সংযুক্ত করা হয়। ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, এর ফলে পায়ের ওই অংশে আবারও রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হবে। তাঁদের কথায়, ‘‘রক্তবাহী নালিগুলিকে যুক্ত করাই সব চেয়ে কঠিন ছিল।” রেসপিরেটরি ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে পর্যবেক্ষণে থাকা কিশোর এখন সামান্য পায়ের আঙুল নাড়ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement