পিজি হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
গলার সামনে থেকে ঘাড় পর্যন্ত ফোলাটা ক্রমশ বাড়ছিল। বড় আকারের মাংসপিণ্ডের জন্য সমস্যাও বাড়ছিল একত্রিশ বছরের তরুণীর। শেষে অস্ত্রোপচার করে হৃৎপিণ্ডের মহাধমনী পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া টিউমারটিকে বাদ দিয়ে তাঁকে বড়সড় ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল।
চিকিৎসকেরা জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের ওই তরুণী ‘সিস্টিক হাইগ্রোমা’-তে আক্রান্ত ছিলেন। ২০১৫ সালেও এর জন্য তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু মাস তিনেক আগে ফের ওই সমস্যা শুরু হয়। এসএসকেএমের কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি (সিটিভিএস) বিভাগের চিকিৎসক দেবতনু হাজরা জানাচ্ছেন, ‘সিস্টিক হাইগ্রোমা’ হল একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, যা সাধারণত শিশুদের (জন্মের পর থেকে দু’বছর বয়সের মধ্যে) ঘাড়ে দেখা যায়। এটি এক বা একাধিক সিস্ট (জলভর্তি টিউমার) নিয়ে গঠিত ও ক্রমশ আকারে বড় হতে থাকে। একবার এই টিউমার হলে পুনরায় রোগটি ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে ২১ শতাংশ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্বে বিশেষত বিদেশে, এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা মাত্র ১৫০ জন।
সম্প্রতি এসএসকেএমের শল্য বিভাগে প্রথমে ভর্তি হন ওই তরুণী। পরীক্ষায় দেখা যায়, টিউমারটি বুকের হাড়ের পিছন দিয়ে গিয়ে হৃৎপিণ্ডের মহাধমনীর পাশে পৌঁছে গিয়েছে। তা অস্ত্রোপচার করতে ডাক পড়ে সিটিভিএসের চিকিৎসকদেরও। সকলে মিলে তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, যে কোনও সময়ে টিউমারটি ফেটে যাওয়া, ভিতরে রক্তক্ষরণ, মহাধমনীর উপরে চাপ তৈরি করার মতো সমস্যার আশঙ্কা ছিল। শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক বিতান চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী বক্সী এবং সিটিভিএসের শিক্ষক-চিকিৎসক শান্তনু দত্ত, শিল্পা বসুরায়ের তত্ত্বাবধানে দেবতনুরা মিলে অস্ত্রোপচারটি করেন। ডাক্তারেরা জানান, বুকের হাড় না কেটে টিউমারটি বাদ দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পরে এখন সুস্থ রয়েছেন ওই তরুণী।