SSC

SSC Protest: প্রখর তাপে রিলে অনশন, বাড়ছে হিট স্ট্রোকের শঙ্কা

গরমে একটি জলের ট্যাঙ্কও কি পুরসভা পাঠাতে পারে না? পুরসভার পানীয় জল দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই জল খারাপ বলে কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৬
Share:

অনড়: জ্বালা ধরানো দুপুরে শুয়ে রয়েছেন এসএসসি-র শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থী অনশনকারীরা। ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

চল্লিশ ছুঁই ছুঁই গরমে ফুটছে শহর। বাইরে বেরোলেই ঘেমেনেয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা হচ্ছে শহরবাসীর। অন্য দিকে, এর মধ্যেই চলছে বিক্ষোভ, রিলে অনশন। ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তি ও শহিদ মিনারের কাছে এসএসসি-র মেধা-তালিকায় থাকা নবম থেকে দ্বাদশের এবং কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষোভ আর রিলে অনশন। চিকিৎসকেরা কিন্তু জানাচ্ছেন, এমন ভয়াবহ গরমে পথে বসে অনশন চালালে ফল মারাত্মক হতে পারে। এমনকি, ‘হিট স্ট্রোক’ পর্যন্ত হতে পারে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘‘যেখানে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে, সেখানে রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে তাঁর হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই।’’

চিকিৎসকদের এই সাবধানবাণীর কথা বিলক্ষণ জানেন বিক্ষোভকারীরা। তবু পিছপা হতে রাজি নন তাঁরা। নিজেদের দাবিতে অনড় কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার অনশনরত বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছেন, ৭ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ ও রিলে অনশনে এখনও পর্যন্ত ৪০ জন অসুস্থ হয়েছেন। অনেকের শরীরে ডিহাইড্রেশন হওয়ায় হাসপাতালেও যেতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই ডিহাইড্রেশন ও শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় আব্দুল হালিম নামে এক অনশনকারীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবু থামছেন না তাঁরা। বরং দাবি পূরণ না হলে আগামী ৭ মে থেকে রিলে অনশনের বদলে আমরণ অনশন শুরু করার কথাই বলছেন বিক্ষোভকারীরা।

Advertisement

এরই মধ্যে এক দগ্ধ দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, মাটিতে শুয়ে কয়েক জন অনশনকারী চাকরিপ্রার্থী। মাথার উপরে শুধু এক ফালি প্লাস্টিক। এক অনশনকারী বলেন, “গরমে স্কুল-কলেজ দেড় মাস ছুটি দেওয়া হচ্ছে। অথচ, আমরা যে এই গরমের মধ্যেই বসে রয়েছি, তা নিয়ে প্রশাসন ভাবছে না। আমাদের দাবি বিবেচনা করে দেখার মতো সহানুভূতির বার্তাটুকুও প্রশাসনের থেকে আসেনি। এখানে যে অনশন চলছে, তার জন্য কোনও ন্যূনতম পরিকাঠামো পাওয়া যায়নি। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জল, ওষুধ দিয়ে যাচ্ছে শুধু।” এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ, শারীরশিক্ষা-কর্মশিক্ষার প্রেসিডেন্ট রাজু দাস বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে যে জল দেওয়া হয়েছে, তা পানের অযোগ্য। ওই জল খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ব।”

পানীয় জল নিয়ে একই অভিযোগ করলেন ওই অনশন মঞ্চ থেকে একটু দূরে, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসা, মেধা-তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এসএসসি-র নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের মাথার উপরে তা-ও গাছের ছায়াটুকু রয়েছে। চন্দন প্রধান নামে এক বিক্ষোভকারী চাকরিপ্রার্থী আবার জানালেন, সেখানে পুরসভা থেকে পানীয় জলের একটি ট্যাঙ্ক দিলেও সেই জল পানের অযোগ্য, তাতে হাত-মুখও ধোয়া যায় না। আর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “গাছের তলাতেও আরাম নেই। গরমে গাছের পাতাও তো নড়ছে না। হাত নেড়ে হাতপাখা ঘোরাতে ঘোরাতে সে-ও ক্লান্ত।”

গরমে একটি জলের ট্যাঙ্কও কি পুরসভা পাঠাতে পারে না? পুরসভার পানীয় জল দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই জল খারাপ বলে কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement