প্রতীকী ছবি।
মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার বলতেই চিরাচরিত ধারণা হল, বেশ কয়েক ঘণ্টার পদ্ধতিতে অনেকটা কাটাছেঁড়া করা। তার পরে অন্তত পাঁচ-সাত দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকা। সেই ধারণাতেই বদল আনতে এ বার আধুনিক পদ্ধতিতে মেরুদণ্ডের সামান্য অংশ কেটে, মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে সেটি দেখে অস্ত্রোপচার শুরু করেছে মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি স্নায়ু চিকিৎসার হাসপাতাল। গত কয়েক মাসে এমন কয়েকশো অস্ত্রোপচার করেছেন তাঁরা। অস্ত্রোপচারের সেই কৌশল ভিন্ রাজ্যের চিকিৎসকদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে কর্মশালার আয়োজন করেছে ‘ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস, কলকাতা’।
শুক্রবার বিকেলে সরাসরি (লাইভ) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই কর্মশালার সূচনা করা হয়। মেরুদণ্ডের শল্য চিকিৎসক অমিত ঝালা, উমেশ শ্রীকান্ত, ক্রিস্টোফার জারবার, গর্গ বসু এবং অনিন্দ্য বসু উপস্থিত ছিলেন সেখানে। লন্ডন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ছিলেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান, চিকিৎসক আর পি সেনগুপ্ত। চেন্নাই, ভুবনেশ্বর, হায়দরাবাদ, পটনা, রাঁচী, গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন রাজ্যের চিকিৎসকেরা অংশ নেন এই প্রশিক্ষণ-কর্মশালায়। চিকিৎসক অনিন্দ্য বসু বলেন, ‘‘কমবয়সিদের মধ্যেও এখন অনেকেরই মেরুদণ্ডের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগে অস্ত্রোপচার করতে হলে অনেকটা অংশ কাটতে হত। তাতে রক্তক্ষরণ হত, আবার হাঁটাচলা করতে রোগীর বেশ কিছুটা সময় লাগত। কিন্তু নতুন পদ্ধতির এই অস্ত্রোপচারে পেটের এক দিকে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার যেমন কাটতে হয়, তেমনই অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘণ্টা পরেই রোগী হাঁটাচলা করতে পারেন। যন্ত্রণাও অনেক কম।’’
অনিন্দ্যবাবু আরও জানান, ‘অবলিক ল্যাটেরাল ইন্টারবডি ফিউশন টেকনিক’ (ওএলআইএফ) পদ্ধতিতে ‘মিনিম্যালি ইনভেসিভ স্পাইনাল ফিউশন প্রসিডিয়োর’ নামে এই অস্ত্রোপচারের খরচ শুরু ৭৫ হাজার টাকা থেকে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওজন বেড়ে যাওয়া, বাড়িতে বসে কাজ করা, কোমরের ব্যায়াম না করা, ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া সহ-জীবনযাত্রায় বিভিন্ন পরিবর্তনের ফলে সব বয়সের মানুষের মধ্যেই মেরুদণ্ডের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে।