ফাইল চিত্র।
পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে ১৫ জানুয়ারি। অথচ সেই পরীক্ষায় বসার জন্য ফর্ম পূরণের নয়া নির্দেশ জারি হল! এমন ‘তাজ্জব’ নির্দেশিকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরের তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের অনার্স,জেনারেল এবং মেজর পরীক্ষা শুরু হয়েছে ১৫ জানুয়ারি। তিন দিন অনার্সের পরীক্ষা হয়েও গিয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষদের কাছে এক নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, বিএ, বি এসসি, বি কম তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের অনার্স, জেনারেল, মেজর (চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম) এবং পুরনো পদ্ধতির পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণের জন্য ওয়েবসাইট এ দিন সকাল ১০টা থেকে আজ, বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ফের খোলা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণ এবং তা অনুমোদনের জন্য কলেজগুলিকে পোর্টাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে বুধবার বেলা ১২টা খোলা রাখতে হবে। আরও বলা হয়েছে, সব পড়ুয়া যে ফর্ম পূরণ করেছেন, তা যেন কলেজ নিশ্চিত করে। এমনকি কয়েক জন অধ্যক্ষ জানাচ্ছেন, উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে তাঁদের ফোন করেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মন্টুরাম সামন্ত জানালেন, এ দিন উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, পরীক্ষার ফর্ম পূরণের জন্য পোর্টাল খোলা
হচ্ছে। মন্টুরামবাবু বলেন, ‘‘এমন কাণ্ড আগে কখনও শুনিনি। রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে কী ভাবে আবার ফর্ম পূরণ হতে পারে?’’ নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানালেন, নির্দেশ মতো তাঁরা পোর্টাল খোলার বিষয়টি ওয়েবসাইট এবং সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন।
এই নির্দেশিকার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ-অধ্যক্ষদের একাংশ একাধিক প্রশ্ন তুলছেন। যেমন, ইতিমধ্যে যে সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে অথচ সেই বিষয়ের কোনও পড়ুয়া যদি নতুন নির্দেশিকার পরে ফর্ম পূরণ করেন, তাঁর কী হবে? হয়ে যাওয়া বিষয়ের পরীক্ষা তিনি কী ভাবে দিতে পারবেন? এমন পড়ুয়ারা নির্ধারিত সময়ে ফর্ম পূরণ না করায় অ্যাডমিট কার্ডও পাননি। ফলে রেজাল্ট তৈরির ক্ষেত্রেই বা কী হবে? এ রকম নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলেই অধ্যক্ষ মহলের মত।
সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরেই বেশ কিছু পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রযুক্তিগত কারণে এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবে পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করা যায়নি। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যক্ষা হিমাদ্রি ভট্টাচার্য চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘পরীক্ষার ফর্ম যে পূরণ হবে সে বিষয়ে কলেজের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতেও পড়ুয়ারা ফর্ম পূরণ করছেন না। আবার তাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন! এ কী রকম কাণ্ড!’’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বার বার পড়ুয়ারা এসে দাবি জানাচ্ছিলেন। তাই এক দিন তাঁদের ফর্ম পূরণের সুযোগ দেওয়া হল।’’