রাজারহাট-নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আগের পুর বোর্ডে নিজেদের মধ্যে ঝগড়াতেই কেটে গিয়েছে দীর্ঘ সময়। শুক্রবার বিধাননগর পুরসভায় মেয়র পারিষদদের শপথের দিনে এ ভাবেই ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন রাজারহাট-নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। পুর বোর্ডের বরিষ্ঠ সদস্যদের তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই স্নেহের পাশাপাশি শাসনেও রাখতে হবে সবাইকে। এর আগে ঝগড়ায় অনেক সময় নষ্ট হয়েছে।’’ পাশাপাশি, রাজারহাট যে সল্টলেকের তুলনায় পিছিয়ে, তা-ও জানিয়ে দেন তাপস।
সল্টলেক-রাজারহাট মিলিয়ে ২০১৫ সালে বিধাননগর পুরসভা (কর্পোরেশন) তৈরি হয়। সেই বোর্ডের ডেপুটি মেয়র ছিলেন তাপস। মেয়র সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে তাঁর ‘রাজনৈতিক সম্পর্ক’ ছিল চর্চার বিষয়। দুই শিবিরের মধ্যে নানাবিধ টানাপড়েন চলত।
পুর নেতৃত্বের শপথের দিনে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে বিধাননগরের নেতা-নেত্রীদের একসঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, ওই নেতা-নেত্রীদের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে অবগত ফিরহাদ। এ দিন তাপসের বক্তব্যেও প্রকাশ্যে এল টানাপড়েনের বিষয়টি। প্রাক্তন মেয়র ও নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান সব্যসাচী বলেন, ‘‘তাপসবাবু ওই কথা কেন বললেন, তা তিনিই বলতে পারবেন।’’
এ দিন মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল-সহ সাত মেয়র পারিষদ কে কোন দফতর পাবেন, তা ঠিক হয়। ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদদের শপথবাক্য পাঠ করান কৃষ্ণা। অনিতা পূর্ত, দেবরাজ চক্রবর্তী নিকাশি, বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য, তুলসী সিংহরায় জল সরবরাহ, রহিমা বিবি (মণ্ডল) পরিবেশ, আরাত্রিকা ভট্টাচার্য ক্রীড়া, সুজিত মণ্ডল আলো (রাজারহাট) ও রাজেশ চিরিমার শিক্ষা দফতর পেয়েছেন। আরও একটি-দু’টি করে দফতর রয়েছে মেয়র পারিষদদের অধীনে। অর্থ ও হিসাব এবং বিল্ডিং-সহ একাধিক দফতর হাতে রেখেছেন মেয়র নিজে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়, বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু ও রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সী। সৌগতবাবু বলেন, ‘‘ইস্তাহারে উন্নয়নের দশটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথা আমরা বলেছি। সেই কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।’’ অনুষ্ঠানের শেষে সব্যসাচী বলেন, ‘‘পরিষেবা দিয়েই এ বারের এই বিপুল ভোট লোকসভা নির্বাচনেও ধরে রাখতে হবে। না হলে মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবেন না।’’