ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণ রুখতে বর্তমানে কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু মন্দির সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গর্ভগৃহে ঢুকে পুজো দিয়েছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন তিনি। আর সেই পোস্ট ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
যদিও মন্ত্রীর দাবি, অনুমতি নিয়েই গর্ভগৃহে ঢুকে পুজো দিয়েছেন তিনি। বুধবার সুজিত ফোনে বলেন, ‘‘আমি অনুমতি নিয়েই পুজো করেছি।’’ কার অনুমতি? সে বিষয়ে অবশ্য সদুত্তর দেননি তিনি।
সরকারি কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হওয়ার পরে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকছে কালীঘাট মন্দির। কিন্তু আলিপুরের জেলা বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিমা দর্শন করা যাচ্ছে মূল মন্দিরের বারান্দা থেকে। যদিও বেশি টাকার বিনিময়ে কোনও কোনও দর্শনার্থীকে গর্ভগৃহে ঢোকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। মন্দির কমিটি সূত্রের খবর, প্রতি সন্ধ্যায় আরতির সময়ে মন্দির খোলা থাকে। তখন সেখানে থাকেন শুধুমাত্র পুরোহিত ও কয়েক জন সেবায়েত। এর পরে মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই সন্ধ্যার পরে মন্ত্রী গর্ভগৃহে ঢুকে কী ভাবে পুজো দিলেন, তা নিয়ে মন্দির কমিটি ও সেবায়েত কাউন্সিলের অন্দরেও প্রশ্ন উঠছে।
কালীঘাট মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ হালদার বলেন, ‘‘ওই সময়ে মন্ত্রী গর্ভগৃহে এসে পুজো করেছেন কি না, তা জানা নেই। তবে তখন তো মন্দির বন্ধ থাকার নির্দেশ রয়েছে।’’ মন্দিরের সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফেসবুকে মন্ত্রীর পুজো করার ছবির বিষয়ে মন্দির কমিটিকে জানিয়েছি। তা হলে তো মন্দিরের নির্দেশাবলী লঙ্ঘন করা হয়েছে বলতে হয়।’’ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরাই আইন মানেন না! সেখানে সুজিত মন্ত্রী হয়ে আইন মানবেন কেন? রাজ্য সরকারের তৈরি বিধি রাজ্যের মন্ত্রীই লঙ্ঘন করছেন। তৃণমূলের কাছে এটাই প্রত্যাশিত।’’
সরকারি কড়াকড়ি শিথিল হওয়ার পরে দরজা খুললেও কয়েক সপ্তাহ ধরে বিকল রয়েছে মন্দিরের জীবাণুনাশক টানেল। মন্দিরের প্রবেশপথে দর্শনার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বার নির্দেশিকা অমান্য করে কী ভাবে গর্ভগৃহে প্রবেশ করলেন মন্ত্রী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।